দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলায় ক্লিনিকে আলট্রাসনোগ্রাম করাতে গিয়ে এক অন্তঃসত্ত্বাকে জোর করে অস্ত্রোপচার করার পর তাঁর মৃত্যুর ঘটনায় অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিচারের দাবিতে এলাকাবাসী গত সোমবার দিনাজপুর-পঞ্চগড় সড়ক অবরোধ করেছে। এ ঘটনায় পুলিশ চারজনকে আটক করেছে।

আটক ব্যক্তিরা হলেন সিটি নার্সিং হোম অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের আয়া আরমিনা খাতুন, নৈশপ্রহরী আজিজার রহমান, আবদুস সালাম এবং ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সহকারী পরিচালক ফাহিমা আকতারের বোন হুসনে আরা।

নিহত নুরেজা বেগমের (৩৫) স্বামী বীরগঞ্জ উপজেলার ভোলানাথপুর গ্রামের সিদ্দিক হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, গত রোববার বিকেলে পৌর শহরের কলেজ মোড় এলাকার সিটি নার্সিং হোম অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে তাঁর স্ত্রী সন্তানসম্ভবা নুরেজা বেগমকে আলট্রাসনোগ্রাম করতে নিয়ে যান। এ সময় ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ব্যবস্থাপক মানিক বিভিন্ন ভয় দেখিয়ে নুরেজাকে ক্লিনিকে ভর্তি করান। ওই দিন রাত নয়টার দিকে ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সহকারী পরিচালক দিনাজপুর এম আবদুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নার্স ফাহিমা আখতার নুরেজার অস্ত্রোপচার করেন। রাত তিনটার দিকে নুরেজার শারীরিক অবস্থা খারাপ হলে তাঁকে দিনাজপুর এম আবদুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করার পর গতকাল সোমবার ভোরে তিনি মারা যান।

নুরেজা বেগমের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে গতকাল দুপুরে স্থানীয় মানুষ ওই ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সামনে লাশ রেখে ঢাকা-পঞ্চগড় মহাসড়ক দুই ঘণ্টা আবরোধ করে রাখেন। এতে সড়কের দুই পাশে যানবাহন আটকা পড়ে। পরে ঘটনার সুষ্ঠু বিচারের আশ্বাসে এলাকাবাসী সড়ক অবরোধ তুলে নেন।

ইউএনও মোহাম্মদ আলম হোসেন বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ নিয়ে ডায়াগনস্টিক সেন্টারে গিয়ে আয়া আরমিনা খাতুন, নাইটগার্ড আজিজার রহমান, আবদুস সালাম এবং ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সহকারী পরিচালক ফাহিমা আকতারের বোন হুসনে আরাকে আটক করা হয়। পরে ডায়াগনস্টিক সেন্টারে তালা লাগিয়ে দেওয়া হয়।

বীরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান বলেন, ওই ডায়াগনস্টিক সেন্টারের কোনো বৈধ কাগজপত্র পাওয়া যায়নি। বীরগঞ্জ থানার ওসি আবু আককাস আহমদ জানান, এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে। ক্লিনিকের কাউকে পাওয়া যাচ্ছে না।