গতকাল সোমবার বেলা ৩টা ২৫ মিনিট। খুলে দেওয়া হলো খুলনা সিটি করপোরেশনের (কেসিসি) প্রধান ফটক। দ্বিতীয় তলায় কর্মকর্তা, কর্মচারী ও কাউন্সিলরদের ভিড়। তাঁদের অনেকেরই হাতে ফুল। উৎসুক মানুষগুলোর চোখ প্রধান ফটকের দিকে।
বেলা সাড়ে তিনটায় কালো রঙের একটি গাড়ি থেকে মূল গেটের সামনে নামলেন কেসিসির নির্বাচিত মেয়র মো. মনিরুজ্জামান মনি। সঙ্গে খুলনা মহানগর বিএনপির সভাপতি নজরুল ইসলাম মঞ্জু। মেয়রের পদ থেকে বরখাস্ত হওয়ার এক বছর পর পা রাখলেন সিটি করপোরেশন কার্যালয়ে। দায়িত্ব নেওয়া সম্পর্কে মেয়র গতকাল রাতে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি দায়িত্বভার গ্রহণ করেছি। মন্ত্রণালয়ের বরখাস্তের আদেশ উচ্চ আদালত ছয় মাসের জন্য স্থগিত করেছে। সুতরাং আমার দায়িত্ব নিতে কোনো সমস্যা নেই। আমি মন্ত্রণালয়ের অনেকের সঙ্গে কথা বলেই সিটি করপোরেশনের দায়িত্ব নিয়েছি।’
উচ্চ আদালতের নির্দেশে মেয়রের দায়িত্ব ফিরে পেয়েছেন মনিরুজ্জামান। গতকাল সকালে আগের বরখাস্তের আদেশ স্থগিত করে প্রজ্ঞাপন জারি করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়।
নাশকতার দুটি মামলায় মেয়রের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র গৃহীত হওয়ায় ২০১৫ সালের ২ নভেম্বর মনিরুজ্জামানকে বরখাস্ত করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। সেই থেকে ভারপ্রাপ্ত মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন প্যানেল মেয়র আনিছুর রহমান বিশ্বাস।
গতকাল নিজ কক্ষে বসার পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় মেয়র মনিরুজ্জামান সাংবাদিকদের বলেন, ‘জনপ্রতিনিধি হিসেবে আমাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব আমরা যথাযথভাবে পালন করব। কেসিসির ঐতিহ্য অনুযায়ী সাধারণ পরিষদের সব সদস্য মিলেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সেভাবেই সিদ্ধান্তগুলো নেওয়া হবে।’
কেসিসি সূত্র জানায়, ২০১৫ সালের ২ নভেম্বর বরখাস্ত হওয়ার প্রায় আট মাস পর গত ৭ জুন হাইকোর্টে রিট পিটিশন করেন মনিরুজ্জামান। হাইকোর্ট স্থানীয় সরকার বিভাগের বরখাস্তের আদেশের ওপর ছয় মাসের স্থগিতাদেশ দেন। এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ। ১৩ নভেম্বর সরকারের আপিল আবেদন খারিজ করে দিয়ে স্থগিতাদেশ বহাল রাখা হয়।
স্থানীয় সরকার বিভাগের গতকালের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ বহাল থাকাকালে মেয়র মনিরুজ্জামানকে সাময়িক বরখাস্তের আদেশের কার্যকারিতা স্থগিত থাকবে।