ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর নারীদের প্রতি সহিংসতা বেড়েই চলেছে

ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর নারীদের ওপর সহিংসতা ও ধর্ষণের ঘটনায় জড়িত দোষী ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার এবং সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে পাঁচ সংগঠন মানববন্ধন করে। জাতীয় জাদুঘর, ঢাকা, ২৯ সেপ্টেম্বর
ছবি: সংগৃহীত

দেশের ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর নারীদের ওপর সহিংসতা ও ধর্ষণের ঘটনায় জড়িত দোষী ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার এবং সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি উঠেছে। আজ মঙ্গলবার সকালে জাতীয় জাদুঘরের সামনে এক মানববন্ধন থেকে এই দাবি করা হয়। মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, বিচারহীনতার সংস্কৃতি চালু থাকায় ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর নারীদের ওপর নিপীড়নের বিচার হয় না।


আজকের মানববন্ধনের আয়োজন করে বাংলাদেশ আদিবাসী যুব ফোরাম, বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘ, বাংলাদেশ আদিবাসী নারী নেটওয়ার্ক, আদিবাসী ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ ও পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ।

কোভিড মহামারির এ সময়ে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর নারীদের ওপর সহিংসতা, নিপীড়ন ও নির্যাতনের মাত্রা তীব্র আকার ধারণ করেছে।

মানববন্ধনের শুরুতে আয়োজকদের পক্ষ থেকে মূল বক্তব্য পাঠ করেন বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘের উপপরিচালক শাহনাজ সুমী। তিনি বলেন, ২৪ সেপ্টেম্বর রাতে খাগড়াছড়িতে দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত প্রায় নয়জন পুনর্বাসিত বাঙালি মানসিক প্রতিবন্ধী এক চাকমা নারীকে (২৬) গণধর্ষণ ও তাঁদের বাড়িতে লুটপাট করেছেন। ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২০ দীঘিনালায় এক পুলিশ পাহাড়ি স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণ করেন। ১৯ সেপ্টেম্বর মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জে এক মনিপুরী নারী (৬০) শারীরিক নির্যাতনের শিকার হন। কোভিড মহামারির এ সময়ে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর নারীদের ওপর সহিংসতা, নিপীড়ন ও নির্যাতনের মাত্রা তীব্র আকার ধারণ করেছে।
বাংলাদেশ আদিবাসী নারী নেটওয়ার্কের সদস্যসচিব চঞ্চনা চাকমা মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন। বাংলাদেশ আদিবাসী যুব ফোরামের সদস্যসচিব অ্যান্টনি রেমা অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন।

মানববন্ধনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক রোবায়েত ফেরদৌস বলেন, ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর নারীর প্রতি যে সহিংসতা ঘটছে, তা রাষ্ট্রের একটি হাতিয়ার, যা এসব জাতির মানুষদের উচ্ছেদেরই একটি অংশ।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক খাইরুল ইসলাম ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর নারী ধর্ষণ ও সহিংসতাকে জাতিগত নিপীড়নের অংশ হিসেবে উল্লেখ করেন।
সংগঠন নাগরিক উদ্যোগের নির্বাহী পরিচালক জাকির হোসেন বলেন, ‘আমরা দোষী ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছি, কিন্তু দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হচ্ছে না।’
কাপেং ফাউন্ডেশনের প্রতিনিধি উজ্জ্বল আজিম বলেন, সমতলের ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষের জন্য পৃথক ভূমি কমিশন গঠনের দাবি জানান।
সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন বেসরকারি সংগঠন এএলআরডির বুলবুল আহমেদ, সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক সালেহ আহমেদ প্রমুখ।