টেকনাফে পুলিশের সঙ্গে 'বন্দুকযুদ্ধে' নিহত ১
কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলায় পুলিশের সঙ্গে কথিত ‘বন্দুকযুদ্ধে’ এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। পুলিশের দাবি, নিহত ব্যক্তি মাদকসংক্রান্ত মামলার পলাতক আসামি। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত সাড়ে তিনটার দিকে উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের পশ্চিম সিকদারপাড়ার পাহাড়ি এলাকায় বন্দুকযুদ্ধের এ ঘটনা ঘটে।
নিহত ব্যক্তির নাম মো. বাবুল হোসেন (৩৫)। তিনি হ্নীলা ইউনিয়নের পশ্চিম সিকদারপাড়ার আনোয়ার হোসাইনের ছেলে। বাবুলের বাবা আনোয়ারকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে।
কক্সবাজার জেলা পুলিশ সুপার এ বি এম মাসুদ হোসেন প্রথম আলোকে এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
পুলিশের দাবি, নিহত ব্যক্তি ইয়াবা ব্যবসার সঙ্গে সরাসরি জড়িত ছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী ও কোতোয়ালি থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে দুটি মামলা রয়েছে। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে একটি দেশীয় অস্ত্র, আট রাউন্ড শটগানের গুলি, বন্দুকের সাতটি খালি খোসা এবং পাঁচ হাজার ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় পুলিশের তিনজন সদস্য আহত হয়েছেন।
জেলা পুলিশ সুপার এ বি এম মাসুদ হোসেন জানান, গোপন খবরের ভিত্তিতে পুলিশ জানতে পারে, পশ্চিম সিকদারপাড়ায় পাহাড়ের ওপর মো. বাবুল হোসাইনের বসতঘরে কয়েকজন ইয়াবা ব্যবসায়ী অবস্থান করছেন। গতকাল দিবাগত রাত সাড়ে তিনটার দিকে টেকনাফ মডেল থানা-পুলিশের একটি দল সেখানে অভিযান চালায়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে ইয়াবা ব্যবসায়ীরা এলোপাতাড়ি গুলি ছোড়ে। এতে পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ বাবুল, কনস্টেবল মোহাম্মদ আজিজ ও রয়েল বড়ুয়া আহত হলে আত্মরক্ষার্থে পুলিশও গুলি ছোড়ে।
পুলিশ সুপার জানান, এ সময় পুলিশ ৩৮ রাউন্ড গুলি চালায়। কয়েকজন পালিয়ে যাওয়ার সময় আনোয়ার হোসাইন নামে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে ঘটনাস্থল থেকে অস্ত্র, গুলি ও ইয়াবাসহ একজনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। তাঁকে দ্রুত টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দেন। গুলিবিদ্ধ ব্যক্তিকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালের নেওয়ার পর চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। মৃতদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।
টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক খান এ আলম বলেন, ভোররাতে তিনজন পুলিশ সদস্যসহ চারজনকে হাসপাতালে আনা হলে তাঁদের মধ্যে একজনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। ওই ব্যক্তির শরীরে তিনটি গুলির চিহ্ন দেখা গেছে। গুরুতর জখম না হওয়ায় আহত তিন পুলিশ সদস্যকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে সকালে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, নিহত বাবুলের বাবা আনোয়ার হোসাইন স্বীকারোক্তি দিয়েছেন, বাবুল সহযোগীদের নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে ইয়াবা ব্যবসা চালিয়ে আসছিলেন।
গত বছর ৪ মে থেকে দেশব্যাপী আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মাদকবিরোধী বিশেষ অভিযান শুরু হয়। এখন পর্যন্ত র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব), পুলিশ, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) বন্দুকযুদ্ধ ও মাদকে প্রভাব বিস্তারসহ বিভিন্ন ঘটনায় কক্সবাজার জেলায় ২ জন নারীসহ ১৪৮ জন নিহত হয়েছে। এর মধ্যে এক নারীসহ ২৭ জন রোহিঙ্গা।