জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতির অভিযোগে গত দুই দিনে আটক করা ১১ জনের বিরুদ্ধে গতকাল সোমবার মামলা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। গতকাল সাতজন ও আগের দিন রোববার চারজনকে আটক করা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, গতকাল বেলা আড়াইটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সেলিম আল দীন মুক্তমঞ্চের পাশ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত কয়েকজন সাংবাদিক এক ভর্তি পরীক্ষার্থীসহ তিনজনকে ধরে প্রক্টরের কার্যালয়ে সোপর্দ করেন। ওই পরীক্ষার্থীর নাম মেহেদী হাসান। তিনি ইনস্টিটিউট অব ইনফরমেশন টেকনোলজির পরীক্ষার্থী। তাঁর সঙ্গে ছিলেন একটি কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী আতিকুল ইসলাম ও একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী আরিফুল ইসলাম। কীভাবে পরীক্ষায় জালিয়াতি করা যায় এ নিয়ে তাঁরা তিনজন আলাপ করছিলেন।
প্রক্টর কার্যালয়ে তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, মেহেদীকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করিয়ে দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন আতিকুল। এ ক্ষেত্রে মধ্যস্থতা করেন আরিফুল।
অন্যদিকে একই সময় সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ভর্তি পরীক্ষা চলাকালে ইমাদ হোসেন, আশরাফুল ইসলাম, আসাদুজ্জামান আবীর ও দীপ্ত সিকদারকে আটক করেন প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা। রোববার আটক হওয়া দুজনের তথ্যের ভিত্তিতে এ চারজনকে আটক করা হয়।
প্রক্টর কার্যালয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে গতকাল সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে আটক সাতজনকে আশুলিয়া থানা-পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়। উপপরিদর্শক রুহুল আমিন তাঁদের থানায় নিয়ে যান।
প্রক্টর তপন কুমার সাহা বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ভর্তি-জালিয়াতির সঙ্গে এ সাতজনের সম্পৃক্ততার প্রমাণ পাওয়া গেছে। তাঁদের পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে।
এ ছাড়া গত রোববার জীববিজ্ঞান অনুষদের ভর্তি পরীক্ষা চলাকালে জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে চারজনকে আটক করে প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা। ওই দিন বেলা দেড়টার দিকে কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে থেকে সন্দেহজনক আচরণের জন্য জামাল হোসেন, মনিরুল ইসলাম ও শোয়েব আলম চৌধুরীকে আটক করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে রাত সাড়ে ১১টার দিকে তাঁদের পুলিশে সোপর্দ করা হয়। ওই দিন দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মশাররফ হোসেন হলের গ্রন্থাগার থেকে শাহনিয়াজ মাহমুদকে আটক করেন হলের শিক্ষার্থীরা। তাঁকে প্রক্টরিয়াল বডির কাছে সোপর্দ করা হয়। রাত সাড়ে তিনটার দিকে প্রক্টরের কার্যালয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাঁকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা সুদীপ্ত শাহিন বাদী হয়ে গতকাল মামলা করেন।
আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মহসিনুল কাদির বলেন, গত দুই দিনে আটক ব্যক্তিদের একই মামলার আসামি করা হয়েছে।