২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন দেখতে ক্লিক করুন
মূল সাইট দেখতে ক্লিক করুন

দোকান ও দেয়াল নির্মাণ করে খেলার মাঠ দখল

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার সোনারামপুর বাজার–সংলগ্ন খেলার মাঠে অবৈধভাবে গড়ে তোলা বাঁশ ও কাঠ বিক্রির দোকান। গত শনিবার তোলা ছবি l প্রথম আলো
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার সোনারামপুর বাজার–সংলগ্ন খেলার মাঠে অবৈধভাবে গড়ে তোলা বাঁশ ও কাঠ বিক্রির দোকান। গত শনিবার তোলা ছবি l প্রথম আলো

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার সোনারামপুরে খেলার মাঠে বাঁশ ও কাঠের দোকান স্থাপন এবং দেয়াল নির্মাণ করে তা স্থানীয় কয়েকজন ব্যবসায়ী দখল করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন এলাকাবাসী।
ইউএনও নূর-ই-খাজা আলামীন বলেন, সোনারামপুর বাজারসংলগ্ন খেলার মাঠে অবৈধভাবে দোকান দিয়ে তা দখলের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে বলেছি।
সোনারামপুর ইউনিয়ন ভূমি কার্যালয় সূত্র জানায়, সোনারামপুর বাজারের পশ্চিম দিকে ১৫৯ শতক জায়গায় একটি খেলার মাঠ রয়েছে। সোনারামপুর মৌজার ৪৯৮ দাগে ১৫৯ শতক জায়গায় এই মাঠ।
সোনারামপুর গ্রামের দুলাল হোসেন বলেন, ‘দখলদারদের উচ্ছেদ করে মাঠটি খেলার উপযোগী করতে আমরা আবেদন করেছি।’
লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, এলাকার কয়েকজন ব্যক্তি গত কয়েক বছর ধরে করাতকল, কাঠ ও মুলি বাঁশের দোকান দিয়ে অবৈধভাবে মাঠের অধিকাংশ জায়গা দখল করে রেখেছেন। কয়েক মাস আগে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও ইউনিয়ন সহকারী ভূমি কর্মকর্তা দখলদারদের খেলার মাঠ থেকে করাতকল, কাঠ ও বাঁশের দোকান সরিয়ে নিতে মৌখিকভাবে সতর্ক করে দেন। কিন্তু দখলদারেরা সরে যাননি।
সরেজমিনে গত শনিবার দেখা যায়, চারপাশ দিয়ে দোকান ও দেয়াল নির্মাণ করায় মাঠের অন্তত অর্ধেক জায়গা দখল হয়ে গেছে। পশ্চিম পাশে বাঁশের দোকান দিয়েছেন সোনারামপুর গ্রামের আবদুল কুদ্দুস মিয়া, মতিন মিয়া, কুদ্দুছ মিয়া ও দক্ষিণ দিকে দেয়াল নির্মাণ করেছেন কালন মিয়া। চর মরিচাকান্দি গ্রামের জালাল মিয়া বাঁশের দোকান দিয়েছেন। করাতকল ও কাঠের দোকান থাকলেও এর মালিককে সেখানে পাওয়া যায়নি।
কালন মিয়া বলেন, ‘আমি এক বছর আগে মেপে আমার জায়গায় দেয়াল নির্মাণ করেছি। সরকারি জায়গা দখল করিনি।’
উপজেলা ভূমি কার্যালয়ের জরিপকারক ওয়াসিম আকরাম বলেন, ‘আমরা যখন মাঠের জায়গা মেপেছি, তখন কালন মিয়ার দেয়াল মাঠের অন্তত চার-পাঁচ ফুট জায়গা দখল করে নির্মাণ করা অবস্থায় পেয়েছি। তখন কালন মিয়াকে দেয়াল সরিয়ে নিতে বলা হয়েছিল।’
বাঁশের দোকানদার আবদুল মতিন, আবদুল কুদ্দুস মিয়া ও কুদ্দুছ মিয়া বলেন, অনেক বছর ধরে বাঁশের দোকান দিয়ে মাঠের এক পাশে ব্যবসা করছি। বাজারের ইজারাদারকে খাজনা দিয়ে দোকান চালাচ্ছি। কিন্তু এত দিন কেউ তাঁদের বাধা দেননি।
বাজারের ইজারাদার নাজিম উদ্দীন বলেন, বাজারে স্থান সংকুলান না হওয়ায় কিছু লোক মাঠে বসেন। তাঁদের কাছ থেকেও খাজনা নেওয়া হয়।
বাঁশের দোকানদার জালাল মিয়া বলেন, ‘এত দিন ব্যবসা করেছি। এখন দোকান সরিয়ে নিচ্ছি।’
সোনারামপুর ইউনিয়ন উপসহকারী ভূমি কর্মকর্তা বজলুল হক বলেন, বাজারের পাশে খেলার মাঠে অবৈধ দখলদারদের চিহ্নিত করা হয়েছে। শিগগিরই তাঁদের সরে যাওয়ার জন্য নোটিশ দেওয়া হবে।
সহকারী কমিশনার (ভূমি) মামুন সরদার বলেন, ‘আগে একবার অবৈধ দখল সরিয়ে নিতে দখলদারদের বলেছিলাম। এবার ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে দখলদারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’