পিটিয়ে ভ্যানচালকের পা ভেঙে দিলেন নিরাপত্তা কর্মকর্তা

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা সুদীপ্ত শাহীনের বিরুদ্ধে পিটিয়ে মো. নাহিদ হোসেন নামের এক ভ্যানচালকের পা ভেঙে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

আজ রোববার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের কাছে এ ব্যাপারে মৌখিক অভিযোগ করেন মারধরের শিকার নাহিদ হোসেন। লকডাউন শুরুর আগে নাহিদ বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় চায়ের দোকান চালাতেন। করোনার মধ্যে ভ্যান চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতে শুরু করেন তিনি।

কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, গত শুক্রবার সন্ধ্যা ছয়টার দিকে ভ্যান চালিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের শিক্ষক মরিয়ম আক্তারের মা–বাবা ও বোনকে নিয়ে জয় বাংলা ফটক থেকে শেখ হাসিনা হলসংলগ্ন শিক্ষক কোয়ার্টারে যান নাহিদ। সেখান থেকে ফেরার পথে বিশ্ববিদ্যালয়ের চৌরঙ্গী এলাকায় তাঁকে আটকান সুদীপ্ত। লকডাউনের সময় বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় ভ্যান-রিকশা চালানোর নিষেধাজ্ঞা থাকার পরও তিনি কেন ভ্যান চালাচ্ছেন—সে বিষয়ে জানতে চান তিনি। এরপর নাহিদকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে নিরাপত্তা কার্যালয়ের সামনে নিয়ে যান সুদীপ্ত। সেখানে নাহিদকে কয়েকটি চড়-থাপ্পড় ও লাথি দেন তিনি।

নাহিদ হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘কন্ট্রোল রুমের সামনে চড়-থাপ্পড় দেওয়ার পর আমাকে রুমে নিয়ে যান সুদীপ্ত। সেখানে লাঠি দিয়ে হাত–পায়ে মারতে থাকেন তিনি। এরপর সেখানেই বসিয়ে রেখে চলে যান। তিন ঘণ্টা বসিয়ে রেখে রাত পৌনে ১০টার দিকে তিনি ফিরে আসেন। এসে আমাকে পুলিশে দেওয়ার হুমকি দেন। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে মুঠোফোনে কথা বলার পর আমাকে চলে যেতে বলেন।’

নাহিদ আরও বলেন, ‘সেখান থেকে বেরিয়ে হাঁটতে পারছিলাম না দেখে সুদীপ্ত আমাকে বলেন, যদি ঠিকঠাক হেঁটে চলে না যাই, তাহলে তিনি মাদক দিয়ে আমাকে পুলিশের হাতে তুলে দেবেন। ভয়ে আমি কোনোরকমে ভ্যান নিয়ে বাসায় চলে আসি। পরে ওই দিন রাত যত বাড়তে থাকে, পায়ের ব্যথাও বাড়তে থাকে। সহ্য করতে না পেরে পরদিন (শনিবার) সকালে সাভারের সিআরপিতে (পক্ষাঘাতগ্রস্তদের পুনর্বাসন কেন্দ্র) গিয়ে চিকিৎসা নিই। এখন ভাঙা পা নিয়ে বাসায় বসে আছি।’

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে সুদীপ্ত প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি ওই ভ্যানচালককে মারধর করা তো দূরের কথা, টাচও করি নাই। যদিও ভ্যান চালানো অবস্থায় এই নিয়ে তাঁকে চারবার ক্যাম্পাসে আটক করেছি আমি। ক্যাম্পাসে ভ্যান-রিকশা চালানো সম্পূর্ণ নিষেধ।’

এ বিষয়ে জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার রহিমা কানিজ ও ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর আ স ম ফিরোজ-উল-হাসানকে মুঠোফোনে কয়েকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাঁরা ফোন ধরেননি।