ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ার নূরপুর গ্রামে গত শুক্রবার রাতে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ জালাল উদ্দিন ওরফে বদু (৩৫) নামের এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। পুলিশ জানিয়েছে, তিনি চুরি ও মাদক মামলার আসামি ছিলেন। এলাকার লোকজন ধরে পিটুনি দেওয়ার পর তাঁকে নিজেদের হেফাজতে নিয়েছিল পুলিশ। পরে অস্ত্র উদ্ধারের অভিযানের সময় সহযোগীদের গুলিতে তিনি নিহত হন।

জালাল উদ্দিন আখাউড়া উপজেলার মোগড়া ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী বাউতলা গ্রামের মৃত দারু মিয়ার ছেলে। তাঁর স্ত্রী হালিমা বেগম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার স্বামী নির্দোষ। এলাকার লোকজন ষড়যন্ত্র করে আমার স্বামীকে ধরে পুলিশে দিয়েছে। আমি রাতে থানায় গিয়ে স্বামীর সঙ্গে দেখা করেছি। তাঁকে খাবারও দিয়েছি। সকালে লোকজনের কাছ থেকে তাঁর মৃত্যুর খবর জানতে পেরেছি।’

আখাউড়া থানার পুলিশ জানিয়েছে, জালালের বিরুদ্ধে এলাকায় সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডসহ মাদক ব্যবসার অভিযোগ রয়েছে। বেশ কিছুদিন ধরে তিনি পলাতক ছিলেন। পরে গত শুক্রবার সকালে বাউতলা গ্রামে তাঁকে দেখতে পেয়ে লোকজন ধরে পিটুনি দেন। সংবাদ পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাঁকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।

আখাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোশারফ হোসেন তরফদার ও উপপরিদর্শক (এসআই) নাজমুল হাসানের ভাষ্য অনুযায়ী, জিজ্ঞাসাবাদে জালালের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে শুক্রবার রাতে তাঁকে নিয়ে অস্ত্র উদ্ধারে নামে পুলিশ। নূরপুর এলাকায় পৌঁছালে জালালের ১৫-১৬ অস্ত্রধারী সহযোগী ও মাদক ব্যবসায়ী পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়ে তাঁকে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। পুলিশও পাল্টা গুলি ছোড়ে। এ সময় জালাল গুলিবিদ্ধ হন। আহত হন এই থানার সহকারী উপপরিদর্শক মো. সেলিম ও কনস্টেবল নয়ন বিকাশ চাকমা। তাঁদের আখাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে চিকিৎসক জালালকে মৃত ঘোষণা করেন। পুলিশ ঘটনাস্থলে থেকে একটি পাইপগান, তিনটি রামদা ও একটি চাপাতি উদ্ধার করেছে।

ওসি আরও জানান, জালাল উদ্দিনের বিরুদ্ধে থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে তিনটি ও চুরির ঘটনায় দুটি মামলা রয়েছে। তাঁর লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। অস্ত্র আইনে এবং পুলিশ আহত হওয়া ঘটনায় শনিবার থানায় দুটি মামলা হয়েছে।