ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত মেজর জিয়ার অবস্থান শনাক্ত করা যায়নি: র‌্যাব

অভিজিৎ রায়

বিজ্ঞানমনস্ক লেখক অভিজিৎ রায় হত্যায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মেজর (বরখাস্ত) সৈয়দ জিয়াউল হকের (মেজর জিয়া নামে পরিচিত) অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত কোনো তথ্য নেই র‌্যাবের কাছে। আজ বুধবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‍্যাবের মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ তথ্য জানান র‍্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

খন্দকার আল মঈন বলেন, ‘কিছু কিছু সময়ে তথ্য পেয়েছি, তিনি দেশে রয়েছেন। দেশের বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করেছি। বিভিন্ন গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে সন্দেহপোষণ করেছি, তিনি হয়তো দেশের বাইরে কোথাও আত্মগোপনে রয়েছেন। তাঁর ব্যাপারেও অভিযান চলমান। আমাদের গোয়েন্দা কার্যক্রমও চলমান। তাঁর বিষয়ে কোনো তথ্য পেলে আপনাদের সামনে উপস্থাপন করব।’
খন্দকার আল মঈন আরও বলেন, ‌‘তিনি (মেজর জিয়া) যদি দেশের বাইরেও থেকে থাকেন, সে সম্পর্কেও যদি তথ্য পাই, তাহলে যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে যোগাযোগ করে তাঁকে দেশে এনে বিচারের আওতায় আনা হবে। দেশের ভেতরেও যদি থাকেন, আমাদের অভিযান অব্যাহত রেখেছি। তাঁকে খুঁজে বের করা হবে।’

অভিজিৎ হত্যার আসামিদের শনাক্ত করার বিষয়ে র‍্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক বলেন, ‘অভিজিৎ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত আসামিদের শনাক্ত করা, আসামিদের বিষয়ে বিস্তারিত জানা, এসব র‍্যাবই প্রথম শনাক্ত করতে সক্ষম হয়েছে। বিচারিক আদালতে আসামিদের বিচার করা, সরকার অত্যন্ত দৃঢ়ভাবে করেছে। অভিজিৎ হত্যাকাণ্ডের পরবর্তী সময়ে মেজর জিয়াকে আমরা বিভিন্নভাবে খোঁজ করার চেষ্টা করেছি। আপনারা জানেন, সাম্প্রতিক সময়ে যে জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলাম, এর সঙ্গেও তাঁর সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে। এই পরিপ্রেক্ষিতেও তাঁকে আমরা খুঁজছি।’

গত সোমবার অভিজিৎ হত্যায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই পলাতক আসামি সৈয়দ জিয়াউল হক, আকরাম হোসেনসহ এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তিদের সম্পর্কে তথ্য চেয়ে ৫০ লাখ ডলার (৪২ কোটি ৫০ লাখ টাকা) পুরস্কার ঘোষণা করেছে যুক্তরাষ্ট্র।

২০১৫ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি বইমেলা থেকে ফেরার পথে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকায় হামলার শিকার হন অভিজিৎ রায়। চাপাতির আঘাতে ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়। হামলায় অভিজিতের স্ত্রী রাফিদা আহমেদও গুরুতর আহত হন।

গত ফেব্রুয়ারিতে আলোচিত এ হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করেন ঢাকার একটি আদালত। রায়ে জঙ্গিগোষ্ঠী আনসার আল ইসলামের সামরিক শাখার প্রধান ও বরখাস্ত মেজর সৈয়দ জিয়াউল হক, জঙ্গিনেতা আকরাম হোসেন ওরফে আবির ওরফে আদনানসহ পাঁচজনকে মৃত্যুদণ্ড এবং একজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। তবে এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছেন জিয়াউল হক ও আকরাম হোসেন।