বেশি দামে তেল বিক্রি, গুদামে ছিল আগের ২২০০ লিটার তেল

সয়াবিন তেল
ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রামের চৌমুহনীর কর্ণফুলী বাজারের মজুমদার স্টোরের মালিক তৌহিদুল ইসলাম দুই মাস আগে ৫ লিটারের সয়াবিন তেল কিনেছিলেন। কেনা পড়েছিল ৭৪০-৭৫০ টাকা। বিক্রি ছিল ৭৬০। তবে তিনি এসব তেল বিক্রি না করে গুদামে ভরে রাখেন। এখন দাম বেড়ে যাওয়ার পর তিনি পুরোনো তেলগুলো ৯৮৫ টাকা দরে বিক্রি করতে শুরু করেন।

খবর পেয়ে আজ শুক্রবার দুপুরে ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তর তাঁর দোকানে অভিযান চালায়। গুদাম থেকে ২ হাজার ২০০ লিটার তেল বের হয়ে আসে। পরে তৌহিদুল ইসলামকে ২ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। দোকানটিও সাময়িক সময়ের জন্য সিলগালা করে দেয় সংস্থাটি। পাশাপাশি গুদামে পাওয়া তেল ভোক্তাদের কাছে বিক্রি করা হয়।

শুধু মজুমদার স্টোর নয়, কম দামে কিনে বেশি দামে বিক্রি করছিল রশিদ অ্যান্ড ব্রাদার্সও। তাঁর দোকানে ৩০০ লিটার পাওয়া যায়। পরে দোকানের মালিক আবদুর রবকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। আর আবদুল হাকিম স্টোরে ১৯৮ টাকা লিটারের বোতল বিক্রি হচ্ছিল ২১০ টাকায়। তাই দোকানের মালিক জাকির হোসেনকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তর চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. ফয়েজ উল্যাহ প্রথম আলোকে বলেন, তিন দোকানিই অবৈধ কাজ করছিলেন। এ কথা তাঁরা স্বীকার করেছেন। এ কারণে তাঁদের জরিমানা করা হয়।

এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম নগরের ছোট পোল এলাকায় বোতলজাত সয়াবিন তেল খোলা হিসেবে বিক্রি করায় বিসমিল্লাহ স্টোরের মালিক নাঈম হাসানকে জরিমানা করা হয়। বুধবার চট্টগ্রামের কর্নেলহাট বাজারের ব্যবসায়ী আইয়ুব আলীকে বাড়তি দামে তেল বিক্রির অপরাধে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

আর সোমবার পাহাড়তলী বাজারের দিল্লি লেন এলাকার একটি দোকানের ৩টি গুদাম থেকে ১৫ হাজার লিটার সয়াবিন তেল জব্দ করে অধিদপ্তর। পরে ওই দোকানিকে ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। জব্দ তেল আশপাশের দোকান ও ভোক্তাদের কাছে নির্ধারিত দামে বিক্রি করা হয়।

অন্যদিকে রোববার নগরের ২ নম্বর গেটের কর্ণফুলী কমপ্লেক্সের খাজা স্টোর নামের একটি দোকানের নিচে থাকা গুদামে ১ হাজার লিটার তেলের খোঁজ পায় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। পরে এসব তেল আশপাশের দোকানি ও ক্রেতাদের কাছে বোতলের গায়ের দামে বিক্রি করা হয়।

৫ মে বাণিজ্যসচিবের সঙ্গে বৈঠকের পর সয়াবিন ও পাম তেলের নতুন দাম নির্ধারণ করে ভোজ্যতেল পরিশোধন ও বাজারজাতকারী প্রতিষ্ঠানের মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন। তাতে বোতলজাত প্রতি লিটার সয়াবিন তেলের খুচরা দাম নির্ধারণ করা হয় ১৯৮ টাকা, যা আগে ছিল ১৬০ টাকা। আর ৫ লিটারের বোতলের দাম ঠিক করা হয় ৯৮৫ টাকা, যেটির আগের দাম ছিল ৭৬০ টাকা। এ ছাড়া খোলা সয়াবিন তেল প্রতি লিটার ১৮০ টাকা এবং খোলা পাম তেল প্রতি লিটার ১৭২ টাকা নির্ধারণ করা হয়। আগে খোলা সয়াবিন তেল প্রতি লিটার ১৩৬ টাকা ও পাম তেলের দাম ছিল ১৩০ টাকা।