মুরাদের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা নেওয়ার আবেদন খারিজ

মুরাদ হাসান
ফাইল ছবি

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নাতনি জাইমা রহমানকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্যের অভিযোগে মুরাদ হাসান ও মহিউদ্দিন হেলাল নাহিদের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা নেওয়ার আবেদন খারিজ করেছেন আদালত। ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেন আজ সোমবার এই আদেশ দেন। প্রথম আলোকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন বাদীপক্ষের আইনজীবী মাসুদ আহমেদ তালুকদার।

খালেদা জিয়ার নাতনিকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্যের অভিযোগ এনে মুরাদ হাসান ও মহিউদ্দিন হেলাল নাহিদের বিরুদ্ধে আজ সকালে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালে মামলা নেওয়ার আবেদন করেন জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের নেতা ওমর ফারুক ফারুকী। আদালত বাদী আইনজীবী ওমর ফারুক ফারুকীর জবানবন্দি রেকর্ড করেন। পরে আদালত বাদীর আবেদনটি খারিজের আদেশ দেন। আদেশে উল্লেখ করা হয়েছে, মামলার বাদী দুজনের বিরুদ্ধে নালিশি অভিযোগ করেছেন। যে বিতর্কিত পোস্ট ঘিরে মামলার আবেদন, তা বাদীর বিরুদ্ধে নয়। আবার বিতর্কিত পোস্ট দ্বারা বাদী নিজেও ক্ষতিগ্রস্ত নন।

মামলা নেওয়ার আবেদনে বাদী দাবি করেন, খালেদা জিয়ার নাতনি ও তারেক রহমানের মেয়ে জাইমা রহমান লন্ডনে আইন পেশায় নিয়োজিত। তাঁর সম্পর্কে মানহানিকর ও মিথ্যা তথ্যসংবলিত বক্তব্য দিয়েছেন মুরাদ হাসান। এ কারণে তাঁর বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা নেওয়ার জন্য আদালতে আবেদন করা হয়েছে।

নারীর প্রতি বিদ্বেষপূর্ণ, অশালীন ও অবমাননাকর বক্তব্যের জেরে সম্প্রতি তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রীর পদ হারান সরকারদলীয় সাংসদ মুরাদ হাসান।

এর আগে মুরাদ হাসান ও মহিউদ্দিনের বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম, রাজশাহী ও সিলেটের পৃথক পৃথক সাইবার ট্রাইব্যুনালে আরও তিনটি মামলা নেওয়ার আবেদন করা হয়েছে। তবে মামলা গ্রহণের বিষয়ে কোনো আদেশ এখনো দেননি আদালত।

সম্প্রতি জাইমাকে নিয়ে মুরাদ হাসানের অশ্লীল মন্তব্য ঘিরে কয়েক দিন ধরেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তীব্র সমালোচনা হচ্ছিল। এর মধ্যে ফেসবুকসহ বিভিন্ন যোগাযোগমাধ্যমে মুরাদ হাসানের ফোনালাপের একটি অডিও ছড়িয়ে পড়ে, যেখানে একজন চিত্রনায়িকার সঙ্গে কথা বলার সময় তিনি নোংরা ও অশ্লীল ভাষা ব্যবহার করেন। একই সঙ্গে তাঁকে হুমকিও দেন।

এ নিয়ে বিভিন্ন মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। পরে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেন মুরাদ হাসান।

পদ হারানোর পর মুরাদ হাসান কানাডার উদ্দেশে দেশ ছাড়েন। তবে কানাডার বর্ডার সার্ভিসেস এজেন্সি তাঁকে সে দেশে ঢুকতে দেয়নি। এরপর তিনি গতকাল রোববার দেশে ফেরেন।

সরকার ও আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্র বলছে, মন্ত্রিত্ব হারানোর পাশাপাশি দল থেকেও বাদ পড়তে পারেন মুরাদ হাসান।

২০১৯ সালের মে মাসে স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব থেকে সরিয়ে মুরাদ হাসানকে তথ্য প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। মুরাদ হাসান জামালপুর-৪ (সরিষাবাড়ী উপজেলা) আসনের সাংসদ। তাঁর বাবা প্রয়াত মতিউর রহমান তালুকদার জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন।