শরীয়তপুরে আবারও শিশু নিখোঁজ
শরীয়তপুরের ডামুড্যা উপজেলার চরমালগাঁও গ্রামের মো. সাকিব চৌকিদার (১৩) নামের এক শিশু নিখোঁজ হয়েছে। সে গ্রামের পাশে শরীয়তপুর সদর উপজেলার বড় সোনামুখী নেছারিয়া আজিজিয়া মাদ্রাসার নাজেরা বিভাগের আবাসিক ছাত্র। তার বাবার নাম দুলাল চৌকিদার।
গত ২৮ জুলাই মাদ্রাসা থেকে বাড়ি ফেরার পথে সে নিখোঁজ হয়। নিখোঁজের ঘটনায় শরীয়তপুর সদরের পালং মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে।
সাকিব চৌকিদারের ভাই শাহিন চৌকিদার বলেন, ‘আমার ভাই ২৮ জুলাই মাদ্রাসা থেকে বাড়ি আসার কথা বলে বের হয়। এরপর আর তার কোনো সন্ধান পাচ্ছি না। বিভিন্ন স্থানে খুঁজে তাকে না পেয়ে বৃহস্পতিবার পালং থানায় জিডি করেছি।’
শরীয়তপুরের পালং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খলিলুর রহমান বলেন, মাদ্রাসার ছাত্র নিখোঁজের বিষয়ে একটি জিডি হয়েছে। পুলিশ ওই ছাত্রের সন্ধানে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালাচ্ছে।
বড় সোনামুখী নেছারিয়া আজিজিয়া মাদ্রাসার পরিচালক আবদুস সাত্তার বলেন, সাকিব চুল কাটিয়ে বাড়ি যাবে বলে মাদ্রাসা থেকে বের হয়। এরপর গতকাল শনিবার পর্যন্ত সে আর মাদ্রাসায় আসেনি।
গত এক মাসে শরীয়তপুরে নিখোঁজের পর দুই শিশুকে হত্যা করা হয়। দুই শিশু এখনো নিখোঁজ রয়েছে। এক শিশুকে অপহরণের চেষ্টা করা হয় এবং দুই শিশু অপহরণের পর উপস্থিত বুদ্ধি দিয়ে অপহরণ চক্রের কবল থেকে ফিরে আসার ঘটনা ঘটেছে।
থানা-পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দা সূত্র জানায়, গত ৭ জুলাই সখীপুর ডিএমখালী ওহাব ঢালীকান্দি গ্রামের মাদ্রাসার ছাত্র সিয়াম মাহমুদ নিখোঁজ হয়। ১৫ জুলাই নিখোঁজ হয় সখীপুর ছৈয়ালকান্দি গ্রামের লিজা আক্তার (১০)। আট দিন পর তার লাশ উদ্ধার করা হয়। সে সখীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী ছিল। ওই ছাত্রীর শরীরের কিডনি, লিভার, ফুসফুসসহ গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ পাওয়া যায়নি। গত ২৪ জুলাই সদর উপজেলার পশ্চিম ভাসানচর এলাকা থেকে ওসমান গনি (১২) নামের এক মাদ্রাসা ছাত্রের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তার বাঁ চোখ পাওয়া যায়নি। শ্বাসনালি ও রক্তনালি কাটা ছিল। গত ২২ জুলাই শরীয়তপুর-নড়িয়া সড়কের কুরাশি এলাকা থেকে মাইক্রোবাসে করে শহরের কালেক্টরেট পাবলিক হাইস্কুলের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র নুরে আলম রাব্বিকে অপহরণ করা হয়। উপস্থিত বুদ্ধি খাটিয়ে নুরে আলম অপহরণ চক্রের কবল থেকে পালিয়ে আসে। ২৩ জুলাই বাড়ি থেকে মাদ্রাসায় যাচ্ছিল জাজিরা উপজেলার হারান টুনিকান্দি গ্রামের ইলিয়াছ ব্যাপারীর ছেলে ইয়াহিয়া ব্যাপারী (১১)। সকাল সাড়ে আটটার দিকে শিবচরের কাঁঠালবাড়ী ফেরিঘাটে পৌঁছালে অপরিচিত এক ব্যক্তি তাকে অচেতন করে নিয়ে যায়। ওই দিন সন্ধ্যার দিকে যখন তার চেতনা ফিরে আসে, তখন কান্না শুরু করলে ঢাকার খিলখেত এলাকায় পথচারীরা তাকে উদ্ধার করে থানায় পৌঁছে দেয়। খবর পেয়ে পরিবারের সদস্যরা তাকে বাড়িতে নিয়ে আসে। গত ২৭ জুলাই শরীয়তপুর পৌরসভার নিরালা আবাসিক এলাকা থেকে জান্নাতুল ইসলাম জুই (৮) নামে এক শিশুকে ধরে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল। ওই শিশু স্থানীয় পালং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী।