পূর্ব সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের মৃগমারী খালে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। গতকাল বুধবার সকালের এ ঘটনায় নিহত শিপন মাতবর (৩২) বনদস্যু ছিলেন বলে জানিয়েছে র্যাব।
র্যাব-৮-এর সহ-অধিনায়ক মেজর আদনান কবির জানান, বনজীবী ও জেলেদের নিরাপত্তা এবং দস্যুদের দমনে চলমান অভিযানের অংশ হিসেবে র্যাবের একটি দল মৃগমারী খালের পুরোনো ফরেস্ট ক্যাম্প-সংলগ্ন এলাকায় নিয়মিত টহল দিচ্ছিল। এ সময় সেখানে আগে থেকে অবস্থান করা শিপন বাহিনীর সদস্যরা র্যাব সদস্যদের লক্ষ্য করে গুলি চালালে আত্মরক্ষায় র্যাবও পাল্টা গুলি চালায়। ৩০ মিনিট স্থায়ী বন্দুকযুদ্ধে দুই পক্ষের মধ্যে শতাধিক গুলি বিনিময় হয়। বন্দুকযুদ্ধ শেষে র্যাব সদস্যরা ওই এলাকায় তল্লাশি চালিয়ে এক ব্যক্তির লাশ পড়ে থাকতে দেখেন।
মেজর আদনান আর জানান, স্থানীয় জেলেরা লাশটি বনদস্যু শিপন বাহিনীর প্রধান শিপন মাতবরের বলে শনাক্ত করেছেন। জেলেদের মতে, শিপনের বাড়ি ঝালকাঠি জেলার কাঁঠালিয়া গ্রামে। তবে তিনি অধিকাংশ সময় মংলা এলাকায় থাকতেন। তাঁর বাবার নাম রঞ্জিত মাতবর। তবে র্যাব ও পুলিশ তাঁর এই পরিচয় নিশ্চিত হতে পারেনি।
ঘটনাস্থল থেকে ১২টি একনলা বন্দুক, দুটি কাটা রাইফেল, দুটি দুই নলা বন্দুক, দুটি পয়েন্ট টু-টু বোরের পিস্তল, ২৮৬টি তাজা গুলি ও ৪৩টি গুলির খোসা, ধারালো অস্ত্র, মুঠোফোন, সিম কার্ড, টোকেন জব্দ করেছে র্যাব।
র্যাব জানায়, তিন বছর ধরে শিপন বাহিনী সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের অন্তর্গত বেড়িরখাল, নন্দবালা খাল, হারবাড়িয়ার খাল, শ্যালা নদী ও পশুর নদ-সংলগ্ন বিভিন্ন খালে ডাকাতি, নিরীহ জেলেদের অপহরণ ও মাছ ধরার ট্রলারে লুটপাট চালিয়ে আসছিল। এই বাহিনীর সদস্যরা জেলেদের অপহরণ করে তাঁদের পরিবারকে ফোন করে বিপুল অঙ্কের টাকা মুক্তিপণ আদায় করে আসছিলেন।
নিহত ব্যক্তির লাশ এবং জব্দ করা অস্ত্র ও গুলি মঙ্গলবার দুপুরে মংলা থানায় হস্তান্তর করা হয়। মংলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লুৎফুর রহমান জানান, এ ঘটনায় অস্ত্র আইনে এবং সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে দুটি মামলা হয়েছে। ময়না তদন্তের জন্য নিহত ব্যক্তির লাশ বাগেরহাটে মর্গে পাঠানো হয়েছে।