দিনাজপুরের ধর্ষণের শিকার পাঁচ বছরের শিশুর অস্ত্রোপচার হয়েছে গতকাল সোমবার। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রায় চার ঘণ্টা ধরে চলা অস্ত্রোপচার শেষে দুপুরে তাকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে স্থানান্তর করা হয়। চিকিৎসকেরা আশা করছেন, শিশুটি পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠবে।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু সার্জারি বিভাগের প্রধান আশরাফুল হক কাজল প্রথম আলোকে বলেন, ‘শিশুটিকে খুব জটিল অস্ত্রোপচারের মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে। তার একটি অঙ্গের একটি অংশ পুরোপুরি তৈরি করতে হয়েছে। বেশ কিছু অঙ্গপ্রত্যঙ্গও মেরামত করতে হয়েছে। সংক্রমণমুক্ত থাকলে তার আর কোনো চিকিৎসার প্রয়োজন হবে না বলে আশা করছি।’ আশরাফুল হক বলেন, ‘আশার কথা হলো শিশুটি যখন প্রথম আসে সে ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকত, কোনো কথা বলত না। আজকাল ওর মায়ের সঙ্গে তো বটেই, আমাদের সঙ্গেও প্রচুর কথা বলছে।’
অস্ত্রোপচারে শিশু সার্জারি, বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি, ইউরোলজি এবং স্ত্রীরোগ ও প্রসূতিবিদ্যার বিভাগীয় প্রধান ও অধ্যাপকসহ ১০ জন অংশ নেন। অস্ত্রোপচারটি জটিল ও সময়সাপেক্ষ হওয়ায় গতকাল শিশু সার্জারি বিভাগে আর কোনো অস্ত্রোপচার করা হয়নি।
শিশুটির বাবা দিনাজপুরে পিকআপ চালান। পেটের দায়ে অসুস্থ মেয়েকে ঢাকায় রেখেই কাজে ফিরেছিলেন। গতকালই এসেছেন আবার। তিনি মেয়েকে আইসিইউতে গিয়ে দেখে এসেছেন। তখন সে ঘুমাচ্ছিল। তিনি বললেন, আজ (মঙ্গলবার) মেয়েকে আইসিইউ থেকে ওয়ান–স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) পাঠানোর কথা। চিকিৎসকেরা তাঁকে আশা দিয়েছেন, মেয়ে পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠবে।
গত ১৮ অক্টোবর দিনাজপুরের পার্বতীপুরের বাড়ি থেকে শিশুটি নিখোঁজ হয়। অনেক খোঁজাখুঁজি করে সেদিন তাকে পাওয়া যায়নি। পরদিন ভোরে শিশুটিকে গুরুতর অবস্থায় বাড়ির কাছে হলুদখেতে পাওয়া যায়। শিশুটিকে প্রথমে স্থানীয় হাসপাতাল, পরে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে আনা হয় ঢাকা মেডিকেলের ওসিসিতে। ধর্ষণের শিকার শিশুটির মাথা, গলা, হাত ও পায়ে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন ও ঊরুতে সিগারেটের ছ্যাঁকার ক্ষত ছিল। সংক্রমণ থাকায় শিশুটির চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ড অস্ত্রোপচারের জন্য প্রায় এক মাস অপেক্ষা করল।