কলেজছাত্রী মোসারাত জাহানকে ধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগে করা মামলায় ফ্ল্যাটমালিক ইব্রাহিম আহমেদ রিপন ছয় সপ্তাহের আগাম জামিন পেয়েছেন। রাজধানীর গুলশানের যে ফ্ল্যাট থেকে মোসারাতের লাশ উদ্ধার করা হয়, সেই ফ্ল্যাটের মালিক ইব্রাহিম।
আগাম জামিন চেয়ে ইব্রাহিমের করা আবেদনের শুনানি নিয়ে আজ রোববার বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি কে এম জাহিদ সারওয়ারের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
আদালতে জামিন আবেদনকারীর পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী নাহিদ সুলতানা। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মো. মিজানুর রহমান।
মো. মিজানুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, এজাহারে ইব্রাহিম আহমেদ রিপনের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ আনা হয়নি। তাঁর পাসপোর্ট জমা রাখা ও তদন্তকাজে সহযোগিতা করার শর্তে হাইকোর্ট ইব্রাহিমকে ছয় সপ্তাহের আগাম জামিন দিয়েছেন। এরপর সংশ্লিষ্ট আদালতে তাঁকে আত্মসমর্পণ করতে হবে।
এর আগে কলেজছাত্রী মোসারাত জাহানকে ধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগে বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমদ আকবর সোবহান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীরসহ আটজনের বিরুদ্ধে ৬ সেপ্টেম্বর ঢাকার আদালতে নালিশি মামলা দাখিল করেন মোসারাতের বোন নুসরাত জাহান। অপর ছয়জন হলেন আহমেদ আকবর সোবহানের স্ত্রী আফরোজা সোবহান, আনভীরের স্ত্রী সাবরিনা, ইব্রাহিম আহমেদ রিপন, শারমিন, সাইফা রহমান মিম ও ফারিয়া মাহবুব পিয়াসা। সেদিন বাদীর জবানবন্দি রেকর্ড করে ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৮ মামলাটি পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের নির্দেশ দেন। ওই মামলায় সায়েম সোবহান আনভীর ১৬ সেপ্টেম্বর আগাম জামিন চেয়ে হাইকোর্ট আবেদন করেন বলে একটি সূত্র জানিয়েছে।
সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে দেখা যায়, ‘সায়েম সোবহান আনভীর বনাম রাষ্ট্র’ শিরোনামে জামিন আবেদনটি একই বেঞ্চের ২৩ সেপ্টেম্বরের কার্যতালিকায় ১৪২৪ নম্বর ক্রমিকে ছিল। কার্যতালিকায় ক্রম অনুসারে শুনানির তারিখ উল্লেখ আছে। এ অনুসারে আনভীরের জামিন আবেদন ২৯ সেপ্টেম্বর শুনানির জন্য রয়েছে।
রাজধানীর গুলশানের একটি ফ্ল্যাট থেকে গত ২৬ এপ্রিল রাতে কলেজছাত্রী মোসারাত জাহানের লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় বসুন্ধরা গ্রুপের এমডি সায়েম সোবহান আনভীরের বিরুদ্ধে গুলশান থানায় আত্মহত্যায় প্ররোচনার মামলা করেন মোসারাতের বড় বোন নুসরাত জাহান। এ মামলায় গত জুলাই মাসে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেয় পুলিশ। ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালত গত ১৮ আগস্ট পুলিশের দেওয়া চূড়ান্ত প্রতিবেদন গ্রহণ করেন। এই আদেশে মামলা থেকে অব্যাহতি পান সায়েম সোবহান আনভীর।