অন্তুর শ্রাদ্ধ করলেন বাবা

ধর্মীয় আচার অনুযায়ী আজ অন্তুর শ্রাদ্ধ হয়েছে। বাবার সঙ্গে অন্য অভিভাবকেরাও শ্রাদ্ধ অনুষ্ঠানে ছিলেন
ছবি: সংগৃহীত

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) বস্ত্রকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থী অন্তু রায়ের শ্রাদ্ধ অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার পশ্চিম গুটুদিয়া এলাকায় অন্তুদের বাড়িতে শ্রাদ্ধ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অন্তুর বাবা দেবব্রত রায় ছেলের শ্রাদ্ধ করেন।

অন্তুর খালাতো ভাই অসীম মণ্ডল বলেন, সকাল থেকে শ্রাদ্ধ শুরু হয়। অন্তুর শ্রাদ্ধ অনুষ্ঠানে হৃদয়বিদারক পরিস্থিতি তৈরি হয়। সবাই কান্নায় ভেঙে পড়েন। বিশেষ করে তাঁর মায়ের আহাজারি পরিবেশকে নিস্তব্ধ করে দেয়। স্বজনদের পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অন্তুর স্যাররাও এসেছিলেন। নিয়মানুযায়ী শ্রাদ্ধ অনুষ্ঠানের পর শিশুদের ভোজনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

গত সোমবার সকালে গ্রামের বাড়ির একটি ঘরের আড়ার সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় অন্তু রায়ের লাশ উদ্ধার করা হয়। ওই দিন রাতে স্থানীয় মন্দিরসংলগ্ন শ্মশানঘাটে অন্তুর মরদেহ দাহ করা হয়। অন্তুর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে বন্ধু-স্বজন, জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক নেতারা প্রতিদিন তাঁদের বাড়িতে আসছেন, সান্ত্বনা দিচ্ছেন। অভাবের কারণেই অন্তু আত্মহত্যা করেছেন, এমন কথা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। আর্থিক অনটনের কারণে ছেলে এমনটা করেছেন, তা মানতে নারাজ অন্তুর মা-বাবা ও স্বজনেরা। তবে অন্তু কেন এই পথ বেছে নিয়েছেন, সেটা তাঁরা বুঝতে পারছেন না।

ধর্মীয় আচার অনুযায়ী আজ অন্তুর শ্রাদ্ধ হয়েছে। রীতি অনুযায়ী পিতার শ্রাদ্ধ করেন পুত্র। তবে পুত্র অবিবাহিত থাকলে পুত্রের শ্রাদ্ধ পিতাই করে থাকেন। পিতার সঙ্গে অন্য অভিভাবকেরাও শ্রাদ্ধ অনুষ্ঠানে ছিলেন। সবাই মাথা মুণ্ডণ করে সাদা ধুতি পরে শ্রাদ্ধে অংশ নেন। রীতি অনুযায়ী, স্বাভাবিক মৃত্যুর ১১, ১৩, ১৫ ও ৩০ দিন পর শ্রাদ্ধ অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। এলাকা ও গোত্রভেদে শ্রাদ্ধ অনুষ্ঠানের দিনের তারতম্য ঘটে। তবে অপমৃত্যুর ক্ষেত্রে তিন দিন পর শ্রাদ্ধ অনুষ্ঠান করা হয়।

অন্তুর বাবা দেবব্রত রায় বলেন, ‘পিতার শ্রাদ্ধ পুত্র করে। কিন্তু কপালে তা লেখা ছিল না। আমার পুত্রের শ্রাদ্ধ অনুষ্ঠান আমাকেই করতে হয়েছে। এই বেদনা সহ্য করা দায়।’

আরও পড়ুন