অপহরণের পর বিক্রি করতে না পেরে দুই কিশোরীকে ধর্ষণচেষ্টা

বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলায় মাদ্রাসার দুই কিশোরীকে অপহরণের পর অস্ত্রের মুখে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় এক তরুণকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গ্রেপ্তার তরুণের নাম মারুফ হাসান (১৯)। র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন-১২, বগুড়া ক্যাম্পের ক্রাইম প্রিভেনশন স্পেশালাইজড কোম্পানির সদস্যরা সোমবার দিবাগত রাতে শহরের খান্দার এলাকায় অভিযান চালিয়ে প্রথমে মারুফ হাসানকে আটক করেন। এরপর তাঁর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে অপহৃত দুই কিশোরীকে উদ্ধার করা হয়। মারুফ হাসানের বাড়ি নন্দীগ্রাম উপজেলার কল্যাণনগর গ্রামে। মঙ্গলবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে র‍্যাব।

র‌্যাব-১২, বগুড়া স্পেশাল কোম্পানির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মারুফ হাসান স্বীকার করেছেন, দুই ছাত্রীকে প্রথমে চট্টগ্রামে নিয়ে বিক্রি করে দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল তাঁদের। লকডাউনের কারণে গাড়ি চলাচল বন্ধ থাকায় তাঁরা ব্যর্থ হন। এরপর মেয়ে দুটিকে বগুড়া শহরের একটি বাসায় আটকে রেখে অস্ত্রের মুখে ধর্ষণের চেষ্টা চালান তাঁরা। আবদুল্লাহ আল মামুন জানান, ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য দুই কিশোরীকে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হবে।

র‌্যাব জানিয়েছে, পবিত্র ঈদুল আজহার পরের দিন ২২ জুলাই সকাল নয়টার দিকে একটি মাদ্রাসার সপ্তম ও নবম শ্রেণির দুই ছাত্রীকে কৌশলে অপহরণ করা হয়। অনেক খোঁজাখুঁজির পর হদিস না পেয়ে অভিভাবকেরা তাঁদের কিশোরী কন্যাদের উদ্ধারে সহায়তা চেয়ে র‍্যাব–১২ বগুড়া ক্যাম্পে এবং নন্দীগ্রাম থানায় অভিযোগ দেন। র‌্যাবের একটি গোয়েন্দা দল অপহরণকারীদের গ্রেপ্তার এবং অপহৃত দুই ছাত্রীকে উদ্ধারে অভিযান শুরু করে। সোমবার দিবাগত রাত একটার দিকে শহরের খান্দার এলাকা থেকে মারুফকে আটক করার পর অপহৃত দুই ছাত্রীকে উদ্ধার করা হয়। মারুফকে মঙ্গলবার নন্দীগ্রাম থানায় সোপর্দ করা হয়েছে। এ ঘটনায় নন্দীগ্রাম থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করা হয়েছে।

বান্ধবীকে আইফোন উপহার দিতে অপহরণ নাটক

এদিকে বগুড়ার সোনাতলা উপজেলায় বান্ধবীকে আইফোন উপহার দিতে বাবার সঙ্গে অপহরণ নাটক সাজানোর অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় রাকিবুল হাসান (রিয়াদ) নামের এক তরুণকে আটক করা হয়েছে।

অপহরণের নাটক সাজাতে সহযোগিতা করায় রাকিবুলের বন্ধু জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার মুন্না হাসানকে (১৮) নামের তরুণকেও আটক করা হয়েছে। পরে দুই তরুণকে অভিভাবকের জিম্মায় দেওয়া হয়। মঙ্গলবার র‍্যাবের পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

র‌্যাব-১২ বগুড়া স্পেশাল কোম্পানির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, বান্ধবীকে আইফোন উপহার দিতে রাকিবুল বাবার কাছ থেকে এক লাখ টাকা মুক্তিপণ আদায়ের জন্য অপহরণ নাটক সাজান। পরিকল্পনা অনুযায়ী মোটরসাইকেল নিয়ে ২৪ জুলাই সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে রাকিবুল বাড়ি থেকে বের হন। কিছুক্ষণ পরই নিজের মুঠোফোন বন্ধ করে দেন তিনি। বাড়ি না ফেরায় অভিভাবকেরা অনেক খোঁজাখুঁজির পর সন্ধান না পেয়ে ২৫ জুলাই সোনাতালা থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন।

২৬ জুলাই রাকিবুলের মুঠোফোন থেকে তাঁর বাবাকে ফোন দিয়ে একজন বলেন, ‘তোর ছেলেকে অপহরণ করা হয়েছে। জীবিত চাইলে এক লাখ টাকা মুক্তিপণ পাঠিয়ে দে।’ রাকিবুলকে ফিরে পেতে মুক্তিপণের টাকা দিতে রাজি হন তাঁর বাবা–মা। একপর্যায়ে সহযোগিতা চাইলে র‌্যাবের একটি দল বগুড়া ও জয়পুরহাট থেকে রাকিবুল ও মুন্না হাসানকে উদ্ধার করে।