নোয়াখালী শহরের শহীদ ভুলু স্টেডিয়ামে স্থাপিত কোভিড-১৯ হাসপাতালের আইসিইউতে করোনা রোগীর মৃত্যুর জের ধরে হট্টগোল হয়েছে। মৃতের স্বজনদের অভিযোগ, চিকিৎসায় অবহেলার রোগী মারা গেছেন।
মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় ধস্তাধস্তিতে আইসিইউ কক্ষের একটি দরজা আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। খবর পেয়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশ যাওয়ার পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
মারা যাওয়া রোগীর নাম সাজেদা আক্তার (৩৭)। তিনি সদর উপজেলার কৃষ্ণরামপুর গ্রামের মো. সুজনের স্ত্রী। সুজন অভিযোগ করেন, ১৫ দিন ধরে তিনি স্ত্রীর সঙ্গে করোনা হাসপাতালে অবস্থান করছেন। প্রায় প্রতিদিন রাত ১২টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত চিকিৎসক–নার্সদের ডাকাডাকি করলেও সেবা পাওয়া যায় না। মঙ্গলবার সকাল থেকে টানা দেড় ঘণ্টা অক্সিজেন সরবরাহ বন্ধ ছিল। এতে তাঁর স্ত্রীর মৃত্যু ঘটে।
তবে মারা যাওয়া রোগীর স্বজনের অভিযোগ নাকচ করে দিয়েছেন জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক হেলাল উদ্দিন। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, কোভিড হাসপাতালে ২৪ ঘণ্টায় চিকিৎসক ও নার্সরা দায়িত্ব পালন করেন। অক্সিজেনের কোনো ধরনের সংকট নেই। দেড় ঘণ্টা সেন্ট্রাল অক্সিজেন সরবরাহ বন্ধ থাকলে সেখানে অনেক রোগী মারা যাওয়ার কথা। এরপরও সেবার ক্ষেত্রে কোনো ধরনের ঘাটতি ছিল কি না, তা খতিয়ে দেখা হবে।
কোভিড হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ১৩ জুলাই সদর উপজেলার কৃষ্ণরামপুর এলাকার বাসিন্দা সাজেদা আক্তার করোনা পজিটিভ হওয়ার পর শ্বাসকষ্ট নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। ভর্তির পর থেকেই ওই রোগীকে আইসিইউ সুবিধা দেওয়া হয়। কিন্তু এরপরও রোগীর অবস্থার কাঙ্ক্ষিত উন্নতি হয়নি। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।
সূত্র জানায়, রোগীর মৃত্যুর পর তাঁর স্বজনেরা উত্তেজিত হয়ে হাসপাতালের ভেতরে ঢুকে পড়েন। তাঁরা ভেতরে তীব্র হট্টগোল করেন। এ সময় স্বজনদের আঘাতে আইসিইউ কক্ষের একটি কাচের দরজা আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ ঘটনায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অন্য রোগী ও কর্তব্যরত চিকিৎসক–নার্সদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পরে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশ এলে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
ঘটনাস্থল পরিদর্শনকারী নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আসাদুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, তিনি হাসপাতালে গিয়ে দেখেন, হাসপাতালের বাইরে রোগীর স্বজনেরা হইচই করছেন। ভেতরে ভাঙচুর হয়েছে শুনে তিনি গিয়ে দেখেন, একটি আইসিইউ কক্ষের দরজার একাংশের পাত সরে গেছে। এ ছাড়া অন্য কোনো ক্ষয়ক্ষতি তাঁর নজরে পড়েনি।
সিভিল সার্জন মাসুম ইফতেখার প্রথম আলোকে বলেন, কোভিড হাসপাতালে অক্সিজেনের কোনো সংকট নেই। পর্যাপ্ত পরিমাণ বড় অক্সিজেন সিলিন্ডার মজুত রয়েছে। এ ছাড়া তাঁর কার্যালয়ে অক্সিজেন ব্যাংকেও অক্সিজেনের যথেষ্ট মজুত রয়েছে। অক্সিজেনের অভাবে কোনো রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ ভিত্তিহীন।