মাহাদি জে আকিব সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। যাওয়ার আগে আইসিইউতে চিকিৎসকদের সঙ্গে মাহাদি
ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে (চমেক) ছাত্রলীগের এক পক্ষের হামলায় গুরুতর আহত মাহাদি জে আকিব সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে তাঁকে হাসপাতালের আইসিইউ থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়। তাঁকে কুমিল্লায় বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়।

হাসপাতালের নিউরো সার্জারি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক নোমান খালেদ চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, মাহাদি সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। তিনি এখন সুস্থ। পরে তাঁর মাথার হাড়ের অংশটি প্রতিস্থাপন করা হবে।

গত ৩০ অক্টোবর অস্ত্রোপচারের সময় মাহাদির মাথার হাড়ের অংশটি তাঁর পেটের চামড়ার নিচে রাখা হয়েছে। বর্তমানে মাথার হাড়হীন খালি অংশটিতে চামড়ার মতো আবরণ তৈরি হয়েছে। তবে সেই জায়গাটি নরম রয়েছে। কোনোভাবে যাতে সেখানে আঘাত না লাগে, সে বিষয়ে চিকিৎসকেরা সাবধান থাকার পরামর্শ দিয়েছেন।

নিউরো সার্জারি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মাহফুজুল কাদের বলেন, তাঁর সব সেলাই কেটে দেওয়া হয়েছে। তিনি হেঁটে হাসপাতাল থেকে বের হয়েছেন। তাঁর বাবার সঙ্গে বাড়ি চলে গেছেন। পরে হাড়টি প্রতিস্থাপন করা হবে।

৩০ অক্টোবর সকালে চমেক ক্যাম্পাসের সামনে রাস্তার ওপর দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ও ছাত্রলীগের এক পক্ষের সমর্থক মাহাদি জে আকিবের ওপর হামলা করে অপর পক্ষ।

আরও পড়ুন

‘হাড় নেই, চাপ দেবেন না’

এতে মাহাদি গুরুতর আহত হন। এর আগের রাতে ছাত্রাবাসে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মারামারির মাধ্যমে ঘটনার সূত্রপাত হয়। এর মধ্যে এক পক্ষ সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারী ও অন্যটি শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীর পক্ষ।

মাথায় মারাত্মক জখম নিয়ে ভর্তি হয়েছিলেন চমেক হাসপাতালে এমবিবিএস দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র মাহাদি জে আকিব
ছবি: সংগৃহীত

এদিকে দুই পক্ষের মারামারির ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটির আগামী রোববার প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা রয়েছে। কমিটির প্রতিবেদন হাতে আসার পর একাডেমিক কাউন্সিলের সভা ডেকে কলেজ খোলার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
কমিটি নতুন করে সময় বাড়ানোর আবেদন করলেও আর সময় দেওয়া হয়নি। গত মঙ্গলবার তারা নতুন করে সময় চেয়েছিল।

চমেক অধ্যক্ষ সাহেনা আক্তার প্রথম আলোকে বলেন, ‘আর সময় বাড়ানো হবে না। এক দফায় ১০ দিন সময় বাড়ানো হয়েছে। এখন ওই বর্ধিত সময়ও পার হয়েছে। আমি রোববার প্রতিবেদন জমা দিতে বলেছি। কারণ আমাকে দ্রুত কলেজ খোলার ব্যবস্থা করতে হবে। তাই প্রতিবেদন এলে একাডেমিক কাউন্সিলের সভা ডাকা হবে।’
৩০ অক্টোবরের ঘটনার পর কলেজ অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়।

পাশাপাশি ঘটনা তদন্তে সার্জারি বিভাগের অধ্যাপক মতিউর রহমান খানকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছিল। কমিটিকে প্রথমে এক সপ্তাহের সময় দেওয়া হয়। এরপর সময় আরও ১০ দিন বাড়ানো হয়।

জানতে চাইলে কমিটির সদস্য ও ছাত্রাবাসের তত্ত্বাবধায়ক সহকারী অধ্যাপক রিজোয়ান রেহান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আবার সময় বাড়ানোর আবেদন করা হয়েছিল। কারণ সাক্ষীদের সবাইকে পাওয়া যাচ্ছে না। তবে তদন্তের কাজ অনেকটা এগিয়েছে। দেখা যাক কী করা যায়।’