আজমেরী ওসমানের বিরুদ্ধে জিডি

প্রাণনাশের হুমকি দেওয়ার অভিযোগে প্রয়াত সাংসদ নাসিম ওসমানের ছেলে আজমেরী ওসমানের বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) হয়েছে। মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও এক প্রধান শিক্ষককে পদে বহাল রাখতে আজমেরী এই হুমকি দেন বলে জিডিতে বলা হয়।

ডি ক্যাপিটাল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড নামের একটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের মহাব্যবস্থাপক অরূপ কুমার সাহা জিডিটি করেন। এই প্রতিষ্ঠানের মালিক মাসুদুজ্জামান নারায়ণগঞ্জ শহরের কিল্লারপুরে অবস্থিত বিবি মরিয়ম বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি।

স্কুলটির প্রধান শিক্ষকের নাম শফিউল আলম খান। আগামীকাল বৃহস্পতিবার তাঁর চাকরির মেয়াদ শেষ হবে।

ফতুল্লা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসলাম হোসেন জানান, জিডির বিষয়টি তদন্ত করতে ইতিমধ্যে থানার পরিদর্শককে (তদন্ত) দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

অভিযোগের বিষয়ে আজমেরী ওসমানের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে তা বন্ধ পাওয়া যায়। তবে আজমেরী ওসমানের মা পারভীন ওসমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক তাঁর ছেলেকে ভুল বুঝিয়েছেন। আমার ছেলে কোথাও যায়নি, কাউকে হুমকিও দেয়নি।’ তিনি আরও বলেন, ‘ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক দুর্নীতি করেছেন। আমি তাঁকে বলেছি, এ বিষয়ে আমার ছেলেকে জড়াবেন না।’

জিডিতে বলা হয়, নিয়মবহির্ভূতভাবে শফিউল আলম খান আবার স্কুলের প্রধান শিক্ষক পদে বহাল থাকতে বিভিন্ন মহলে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেন। তাঁর তদবিরে ২৮ সেপ্টেম্বর বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে আজমেরী ওসমান (৪০) তাঁর সহযোগী তরিকুল ইসলাম (৩৬), আনোয়ারুল করিম (৪৫) ও সনেটকে (৩৬) নিয়ে শহরের তল্লায় ডি ক্যাপিটাল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড নামের প্রতিষ্ঠানে যান।

তাঁরা কারখানার নিরাপত্তাকর্মীদের ধাক্কা মেরে ভেতরে ঢুকে আরেক মহাব্যবস্থাপক মনির হোসেনকে গালিগালাজ করে খুন করার হুমকি দেন। যাওয়ার সময় আজমেরী ওসমান বলেন, ‘নিয়মটিয়ম বুঝি না, মেয়াদ শেষ হলেও শফিউল আলমকে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বে বহাল রাখতে হবে। আবার যদি আসি, তাহলে খুব খারাপ হবে।’ মনির হোসেন তাঁর প্রতিষ্ঠানের মালিক এবং ওই স্কুলের সভাপতি মাসুদুজ্জামানের হয়ে স্কুলের ব্যবস্থাপনা কমিটির বৈঠকের কাগজপত্র ঠিকঠাক করে রাখতেন।

যোগাযোগ করা হলে বিবি মরিয়ম বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শফিউল আলম প্রথম আলোকে বলেন, আগামীকাল তাঁর চাকরির শেষ দিন। আজমেরী ওসমানের সঙ্গে তাঁর কোনো যোগাযোগ নেই। তাঁকে চাকরিতে পুনরায় রাখার বিষয়টি ষড়যন্ত্র উল্লেখ করে তিনি বলেন, চাকরিতে রাখার এখতিয়ার বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির। কোনো হুমকি–ধমকি দিয়ে তো চাকরি হয় না। এটি অশুভ ষড়যন্ত্র বলে তিনি মন্তব্য করেন।

এ ব্যাপারে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি মাসুদুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, ৬০ বছরের ওপরে ওই পদে রাখা কোনো ম্যানেজিং কমিটির পক্ষে সম্ভব নয়। এটি আইনে পড়ে না। তাহলে এখানে ষড়যন্ত্র করল কে? তিনি (শফিউল আলম) এগিয়ে এসে প্রশাসনের কাছে বলুক, প্রমাণ করুক, তিনি ষড়যন্ত্রের সঙ্গে জড়িত নন।