‘আলো স্বল্পতায়’ কুয়েট শিক্ষকের লাশ উত্তোলন পেছাল

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সেলিম হোসেন
ছবি: সংগৃহীত

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) অধ্যাপক মো. সেলিম হোসেনের মরদেহ কবর থেকে তোলা হয়নি। আজ মঙ্গলবার কবরস্থানে উপস্থিত হওয়ার পর দিনের আলো ফুরিয়ে যাওয়ায় আগামীকাল মঙ্গলবার লাশ উত্তোলনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন।

লাশ উত্তোলনের দায়িত্বে ছিলেন কুষ্টিয়ার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আহমেদ সাদাত। মঙ্গলবার বিকেল পাঁচটার দিকে কুমারখালী উপজেলার বাঁশগ্রাম থেকে মুঠোফোনে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘দিনের আলো কমে যাওয়ায় লাশ উত্তোলন শেষ করতে রাত হয়ে যাবে। এ জন্য তোলা সম্ভব হচ্ছে না। কাল (বুধবার) সকাল সাড়ে আটটায় লাশ তোলা হবে।’

এর আগে ময়নাতদন্তের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে লাশ তোলার আইনগত দিকগুলো খতিয়ে দেখেন কুষ্টিয়া জেলা ম্যাজিস্ট্রেট। লাশ তোলার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে ৬ ডিসেম্বর খুলনা জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও জেলা প্রশাসক মো. মনিরুজ্জামান তালুকদারের পাঠানো একটি চিঠি হাতে পান কুষ্টিয়া জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম।

ওই চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, কুয়েটের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী আনিচুর রহমান স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে অধ্যাপক সেলিম হোসেনের মৃত্যুকে অস্বাভাবিক মৃত্যু হিসেবে উল্লেখ করা হয়। মৃত্যুর সঠিক কারণ অনুসন্ধানের কথা বলা হয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের খানজাহান আলী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শাহরিয়ার হাসান লাশ কবর থেকে তুলে ময়নাতদন্তের জন্য আবেদন করেন। সেই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কুষ্টিয়া জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে বলা হয়।

কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আহমেদ সাদাত বলেন, খুলনা থেকে পুলিশের একটি দল মঙ্গলবার বেলা সাড়ে তিনটায় কুষ্টিয়ায় পৌঁছায়। এরপর প্রয়োজনীয় কাজ শেষ করে বাঁশগ্রাম যেতে বিকেল পাঁচটা বেজে যায়। যেহেতু দিনের আলোতে লাশ তোলার কাজ সমাপ্ত করা সম্ভব নয়, তাই বুধবার সকাল সাড়ে আটটায় লাশ তোলার কাজ শুরু হবে। লাশ তোলার পর ময়নাতদন্তের জন্য লাশ কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হবে।

গত ৩০ নভেম্বর কুয়েটের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক (ইইই) ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ও লালন শাহ হলের প্রাধ্যক্ষ সেলিম হোসেন (৩৮) ক্যাম্পাসের পাশের ভাড়া বাসায় মারা যান। ১ ডিসেম্বর ময়নাতদন্ত ছাড়া তাঁর মরদেহ কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার বাঁশগ্রামে দাফন করা হয়।

ক্যাম্পাস সূত্র জানায়, ওই দিন বাসায় ফেরার পথে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা অধ্যাপক সেলিমকে বিভাগে তাঁর কক্ষে নিয়ে যান। সেখানে তাঁর ওপর মানসিক নিপীড়ন চালানো হয়। ছাত্রলীগের কিছু নেতা-কর্মীর মানসিক নিপীড়নের কারণে তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি বলছে, এটি হত্যাকাণ্ড। অধ্যাপক সেলিমের পরিবারও এটিকে হত্যাকাণ্ড বলে অভিযোগ করেছে।

আরও পড়ুন