ঈদের দিনে পরিবহনসংকট, ভরসা মহাসড়কে নিষিদ্ধ অটোরিকশা

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে পরিবহনসংকটের কারণে মানুষকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা গাড়ির জন্য মহাসড়কের পাশে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। ছবিটি সীতাকুণ্ডের বাঁশবাড়ীয়া ইউনিয়নের পুরোনো পুলিশ ফাঁড়ি এলাকা থেকে তোলা
ছবি: প্রথম আলো

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলায় আজ সকাল থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে গণপরিবহনের সংকট দেখা দিয়েছে। ফলে যাত্রীদের একমাত্র ভরসা হয়ে ওঠে মহাসড়কে নিষিদ্ধ তিন চাকার সিএনজিচালিত অটোরিকশা। পরিবহন-সংকটের কারণে ঈদে আত্মীয়স্বজনদের বাসায় বেড়াতে যাওয়ার জন্য মানুষকে কখনো হেঁটে, আবার কখনো তিন গুণ ভাড়া দিয়ে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় চলাচল করতে দেখা গেছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার কুমিরা থেকে সীতাকুণ্ড পর্যন্ত ১৫ কিলোমিটার দূরত্বে তেমন কোনো গণপরিবহন চোখে পড়েনি। সেভাবে দূরপাল্লার গাড়িও দেখা যায়নি। মহাসড়ক ছিল সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও মোটরসাইকেলের দখলে। মোটরসাইকেলগুলোর অধিকাংশই দু-তিনজনের বেশি যাত্রী নিয়ে চলাচল করছিল। এ ছাড়া গতি ছিল বেপরোয়া। যদিও কোথাও কোনো দুর্ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।

বাঁশবাড়িয়া পুরোনো পুলিশ ফাঁড়ি এলাকায় কথা হয় পারভেজ ও হাসান নামের দুই তরুণের সঙ্গে‌। তাঁদের বাড়ি থেকে অন্তত ২৫ কিলোমিটার দূরে ফৌজদারহাট এলাকায় চাচির বাড়িতে যাওয়ার জন্য গণপরিবহনের অপেক্ষায় ছিলেন তাঁরা। কিন্তু দেড় ঘণ্টার মধ্যে তাঁরা সড়কে কোনো বাস-মিনিবাস, লেগুনার দেখা পাননি। যেসব সিএনজিচালিত অটোরিকশা চলছিল, তার প্রায় সবই যাত্রীতে পরিপূর্ণ ছিল। ফলে তাঁরা একসঙ্গে ছয়জন কোনো অটোরিকশায় ওঠার সুযোগ পাচ্ছিলেন না। এ ছাড়া একটা সিএনজিচালিত অটোরিকশা তাঁদের কাছে প্রায় তিন গুণ ভাড়া দাবি করে বলে জানান তাঁরা।

সীতাকুণ্ড এলাকায় কথা হয় নাজমুল আলম নামের আরেক ব্যক্তির সঙ্গে। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, সুলতানা মন্দির এলাকা থেকে সীতাকুণ্ডে ভাড়া ১৫ টাকা। অথচ অটোরিকশায় জনপ্রতি ৫০ টাকা করে ভাড়া দিতে হয়েছে।

অটোরিকশার চালক মো. মফিজ উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, সারা বছর মহাসড়কে সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালাতে পারেন না। শুধু দুই ঈদের দুই দিন মহাসড়কে অটোরিকশা চালালে প্রশাসন কিছু বলে না। ঈদ উপলক্ষে তাঁরা বকশিশ হিসেবে কিছু বাড়তি ভাড়া নিচ্ছেন। আগামীকাল থেকে বেশি নেওয়া হবে না।

বারআউলিয়া হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী নাজমুল হক প্রথম আলোকে বলেন, সকাল থেকে লেগুনা কিংবা মিনিবাস-জাতীয় পরিবহন একেবারে নেই বললেই চলে। অনেক মানুষকে বৃষ্টিতে ভিজে গাড়ির জন্য অপেক্ষা করতে দেখা গেছে। মানুষের দুর্দশা লাঘবে তাঁরা সিএনজিচালিত অটোরিকশাকে বাধা দিচ্ছেন না। তবে ভাড়ার বিষয়টি উপজেলা প্রশাসন দেখবে বলে তিনি জানান।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. শাহাদাত হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ঈদের দিন হওয়ায় সম্ভবত গণপরিবহন কিছুটা কম আছে। আগামীকাল থেকে যেন পুরোদমে গণপরিবহন চলতে পারে, সে জন্য মালিক সমিতির নেতাদের ডেকে নির্দেশনা দেওয়া হবে। এ ছাড়া ভাড়া যেন অতিরিক্ত না নেওয়া হয়, সে বিষয়েও সতর্ক করা হবে।