ঈদের দিন কক্সবাজার সৈকতে ৫০ হাজার পর্যটক
ঈদের দিন আজ মঙ্গলবার কক্সবাজারে সমুদ্রসৈকতের বিভিন্ন পয়েন্টে ৫০ হাজারের মতো পর্যটক জড়ো হয়েছেন। আগামীকাল থেকে পর্যটকের সংখ্যা আরও বাড়বে। এবার ঈদের ছুটিতে কক্সবাজারে ১০ লাখ পর্যটক যাবেন বলে পর্যটন-সংশ্লিষ্টরা ধারণা করছেন।
কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতের সুগন্ধা পয়েন্টে আজ বেলা ১১টার দিকে পাঁচ হাজার পর্যটক নামেন। এর উত্তর পাশের সিগাল, লাবণী পয়েন্টে আরও ১৫ হাজার পর্যটকের সমাগম হয়। দক্ষিণ পাশের কলাতলী পয়েন্টে ঘুরতে যান পাঁচ হাজারের মতো পর্যটক। সব মিলিয়ে চার কিলোমিটার সৈকতে ২৫-৩০ হাজার পর্যটকের দৌড়ঝাঁপ। বিকেলে সৈকতে জড়ো হন আরও ২০-৩০ হাজার পর্যটক। ট্যুরিস্ট পুলিশের সদস্যরা সৈকতের বিভিন্ন পয়েন্টে সাতটি পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে বসে পর্যটকের নিরাপত্তা ও সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করছেন।
ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রেজাউল করিম প্রথম আলোকে বলেন, ঈদের প্রথম দিনে সৈকতে নেমেছেন ৫০ হাজারের বেশি পর্যটক। সঙ্গে স্থানীয় বাসিন্দারা নেমেছেন আরও ২০-৩০ হাজার। আগামীকাল ঈদের দ্বিতীয় দিনে সৈকতে নামতে পারেন দেড় থেকে দুই লাখ পর্যটক। বিপুলসংখ্যক পর্যটকের নিরাপত্তা নিশ্চিতে দুই শতাধিক ট্যুরিস্ট পুলিশকে হিমশিম খেতে হচ্ছে। সৈকতে রাত-দিন ২৪ ঘণ্টা নিরাপত্তা নিশ্চিত করছে ট্যুরিস্ট পুলিশ।
হোটেলের মালিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঈদের টানা সাত দিনের ছুটিতে কক্সবাজার ভ্রমণে আসছেন অন্তত ১০ লাখ পর্যটক। ইতিমধ্যে পাঁচ শতাধিক হোটেল, মোটেল, গেস্টহাউস, রিসোর্ট ও কটেজের ৯০ শতাংশ কক্ষ অগ্রিম বুকিং হয়ে গেছে। সাত দিনে পর্যটন-সংশ্লিষ্ট নানা খাতে অন্তত ৫০০ কোটি টাকার ব্যবসা হবে।
ঢাকার মগবাজার এলাকার ঠিকাদার আবদুল গণি সাগরে নেমেছেন স্ত্রী ও কলেজপড়ুয়া ছেলেকে নিয়ে। কোমরসমান পানিতে ভাসছেন টিউবে। আধা ঘণ্টা পর বালুচরে উঠে বসেন চেয়ার-ছাতার কিটকটে। মামুনুর রশিদ নামের আরেক পর্যটক বলেন, লোনাজলে শরীর ভেজাতে কক্সবাজারে ছুটে আসা।
চার কিলোমিটার সৈকতে বসানো হয়েছে এক হাজারের বেশি চেয়ার-ছাতার কিটকট। প্রতিটি কিটকটে বসে আসেন দুই থেকে চারজন। সবার দৃষ্টি সমুদ্রের দিকে। পর্যটকদের কেউ ঘোড়ার পিঠে উঠে ছুটছেন সৈকতের এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্তে। বিচ বাইকে চড়েও কেউ কেউ এদিক-ওদিক ছুটছেন।
দরিয়ানগর সৈকতে প্যারাসেইলিং করছে ফ্লাই এয়ার সি স্পোর্টস প্যারাসেইলিং নামের বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠান। এর মালিক মোহাম্মদ ফরিদ বলেন, বেলা দেড়টা পর্যন্ত ২০ জন পর্যটক প্যারাসেইলিং করেছেন। আগামীকাল সংখ্যাটা দ্বিগুণ হতে পারে। টিকিটের মূল্য জনপ্রতি ২ হাজার থেকে ২ হাজার ৫০০ টাকা। ২ হাজার টাকার টিকিট দিয়ে আকাশের উড়তে পারবেন সর্বোচ্চ ১০ মিনিট। আর ২ হাজার ৫০০ টাকার টিকিটে ওড়ার পাশাপাশি সমুদ্রের লোনাজলে দুইবার পা ভেজানোর সুযোগ পান পর্যটকেরা।
ফেডারেশন অব ট্যুরিজম ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম সিকদার বলেন, ঈদের সাত দিনের ছুটিতে ১০ লাখের বেশি পর্যটকের সমাগম ঘটবে কক্সবাজারে। ইতিমধ্যে পাঁচ শতাধিক হোটেল, মোটেল, গেস্টহাউসের ৯০ শতাংশ কক্ষ অগ্রিম বুকিং হয়েছে।
জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ বলেন, হোটেলে কক্ষ ভাড়ার বিপরীতে অতিরিক্ত টাকা আদায় করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কক্ষ ভাড়ার তালিকা টাঙানোর নির্দেশনা দেওয়া আছে। অতিরিক্ত কক্ষ ভাড়া যেন আদায় না হয়, সে ব্যাপারে তৎপর থাকবেন জেলা প্রশাসনের পৃথক চারটি ভ্রাম্যমাণ আদালত।