গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি থাকা করোনায় আক্রান্ত রোগীদের ঈদের নতুন পোশাক, ফলমূল ও পুষ্টিকর খাবার দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় সাংসদ ইকবাল হোসেনের নিজস্ব অর্থায়নে আজ মঙ্গলবার এ পোশাক ও ফলমূল দেওয়া হয়।
এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা প্রণয় ভূষণ দাস বলেন, ‘ভর্তি থাকা রোগীদের মানসিকভাবে উৎফুল্ল রাখতে আমাদের সাংসদ নিজ উদ্যোগে এসব পোশাক দিয়েছেন। এটা দেশে একটা উদাহরণ। রোগীদের মানসিক শক্তি অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। একই সঙ্গে রোগীদের তিনি খাবার, অন্যান্য ফলমূলসহ ওষুধ কিনে দিচ্ছেন।
প্রণয় ভূষণ বলেন, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে একজন রোগীও যেন অক্সিজেনের সংকটে না ভোগেন, তা নিশ্চিত করতে নির্দেশ দিয়েছেন সাংসদ। গত সোমবার সাংসদ ইকবাল হোসেন তাঁর নিজ অর্থায়নে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে ১০টি অক্সিজেন সিলিন্ডার ও বিপুল পরিমাণ মাস্ক উপহার দিয়েছেন। একই সঙ্গে ঈদ-পরবর্তী জরুরি প্রয়োজনে শিল্প শহরে অবস্থিত হাসপাতালকে আরও বেশি প্রস্তুত থাকতে পরামর্শ দিয়েছেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে পাওয়া সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী সেখানে করোনা রোগী ভর্তি আছেন মোট তিনজন। তাঁদের মধ্যে একজন নারী। তিনজনের মধ্যে বয়স্ক রোগী আছেন একজন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তাঁদের তিনজনেরই অক্সিজেন প্রয়োজন হয়েছে। এখনো জটিলতা না কাটায় তাঁদের হাসপাতালে থাকতে হবে। এ ছাড়া মঙ্গলবার ৫০ জনের নমুনা পরীক্ষায় ২৬ জনের করোনা পজিটিভ ফল এসেছে বলেও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সিনিয়র স্টাফ নার্স মোছা. নুরজাহানের ব্যবহৃত মুঠোফোনের লাউড স্পিকারের মাধ্যমে কথা হয় সেখানে ভর্তি থাকা একজন রোগীর (৭০) সঙ্গে। তিনি বেশ কিছুদিন ধরে হাসপাতলে অক্সিজেন সাপোর্ট নিচ্ছেন। তবে এখন নিশ্বাস অনেকটাই স্বাভাবিক। ওই রোগী প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা যারা অসুস্থ, তারাই জানি, কতটা অসহায় মনে হয় নিজেকে। হাসপাতালে থেকেও ঈদে নতুন জামা পাওয়া যায়, খাবার পাওয়া যায়, এটা একটা নতুন অভিজ্ঞতা। রোগীরা এতে উৎফুল্ল থাকবে। উদ্যোগটা অনেক ভালো লাগল। দেশের সব হাসপাতালেই এমন ব্যবস্থা হলে ভালো হতো।’
সাংসদ ইকবাল হোসেন বলেন, ‘অক্সিজেন–স্বল্পতার জন্য মানুষের মৃত্যুর খবর শুনেছি। অনেক ব্যথিত হয়েছি এ ধরনের খবরে। শ্রীপুরে যেন একজন মানুষেরও অন্তত অক্সিজেনের সংকটে মৃত্যু না হয়, আমি সেটাই চাই। সেখানে থাকা রোগীদের মানসিকভাবে উৎফুল্ল রাখাসহ সব ধরনের সহযোগিতা নিশ্চিত করা আমাদের দায়িত্ব। ঈদে হাসপাতালে থাকা রোগীদের জন্য নতুন কাপড়, বিশেষ খাবার, ফলমূলসহ বিভিন্ন উপহার দেওয়ার ব্যবস্থা করেছি। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে বলেছি, আরও যা যা দরকার, তা যেন আমাকে জানায়। সব ব্যবস্থা করব।’