একঘেয়েমি কাটাতে গিয়ে স্বাস্থ্যবিধির বারোটা

লকডাউনের মধ্যেই ঘুরতে বেরিয়েছেন মানুষ। শুক্রবার সন্ধ্যায় গোয়ালন্দ উপজেলার উজানচর মরা পদ্মা এলাকায়ছবি: প্রথম আলো

বিধিনিষেধে ঘরে মন টিকে না। দূরের কোথাও না হোক, নিজ এলাকার নদীর ধার বা আশপাশের খোলা জায়গায় একটু ঘোরাফেরা করা যায়। এমন বিনোদনপিয়াসী বিভিন্ন বয়সী মানুষের ভিড় বাড়ছে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার উজানচর মরা পদ্মা নদীতে। স্থানীয় ব্যক্তিদের পাশাপাশি আশপাশের এলাকা থেকেও ছুটে আসছেন অনেকে। এতে স্বাস্থ্যবিধি অনেকটাই উপেক্ষিত থাকছে।

উজানচর মরা পদ্মা নদীর ওপর নির্মিত নতুন ব্রিজ বা মাখন রায় পাড়া ব্রিজের পশ্চিমে নদী ঘেঁষে নির্মিত হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর। একই ধরনের সারিবদ্ধ বেশ কয়েকটি ঘর থাকায় বাড়তি সৌন্দর্য তৈরি হয়েছে। ব্রিজের দুই পাশে খোলা আকাশের নিচে মুক্ত হাওয়া খেতে আসা মানুষ বাড়তি বিনোদন পাচ্ছেন। কোরবানির ঈদের সময় থেকে এলাকায় প্রায় প্রতিদিন ভিড় দেখা যাচ্ছে। ভিড় সামলাতে মাঝেমধ্যে উপজেলা প্রশাসন অভিযান চালিয়ে জরিমানা করছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা মহড়া দিলে ভিড় অনেকটা কমে যায়। তাঁরা চলে গেলেই আগের চেহারা ফিরে আসে।

গত শুক্রবার রাতেও নতুন ব্রিজে মানুষের এমন ভিড় দেখা যায়। বিকেল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত নারী-পুরুষ, শিশুসহ নানা বয়সী মানুষের ভিড় থাকে। মরা পদ্মা নদীতে ডিঙি বা পানসিতে করে সবাই মুক্ত হাওয়ায় প্রাণ জুড়ানোর চেষ্টা করছেন। তবে কোথাও ছিল না শারীরিক দূরত্ব। অধিকাংশের মুখে ছিল না মাস্ক।

ঢাকার একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন ঈদের ছুটিতে বাড়িতে যান। শুক্রবার সন্ধ্যায় তাঁর সঙ্গে আলাপকালে বোঝা গেল, তাঁর মনে চাপা কষ্ট। গত বছরের ৪ ডিসেম্বর বিয়ে করেছিলেন। কিন্তু সম্পর্ক টিকেনি। তিন মাসের মাথায় ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। তিনি বলেন, ‘ঢাকায় থাকার কারণে তেমন বাড়িতে আসা হয় না। ঈদের পর কোম্পানি পরিবর্তনের কথা আছে। হাতে সময় থাকায় একঘেয়ে জীবনকে একটু বদলাতে এখানে আসা। ব্রিজের ওপর মুক্ত আকাশে সময় কাটাতে বেশ ভালো লাগছে। তবে মানুষের ভিড় দেখে ভয় লাগছে।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আজিজুল হক বলেন, ‘আমরা মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে সবধরনের কর্মসূচি গ্রহণ করেছি। উজানচর নতুন ব্রিজের ওপর বিভিন্ন এলাকার মানুষের ভিড় দেখে মাঝেমধ্যে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেছি। সতর্কতা হিসেবে অনেককে জরিমনা করেছি। তারপরও মানুষের যদি হুঁশ ফিরে না আসে, তাহলে কী করার আছে?’