একটি কেন্দ্রে শতভাগ ভোট, পরাজিত প্রার্থীর মামলা নির্বাচন ট্রাইব্যুনালে

ইউপি নির্বাচন
প্রতীকী ছবি

ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার মাইজবাগ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) বিল রাউল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে শতভাগ ভোট পড়ার ঘটনায় নির্বাচন ট্রাইব্যুনালে একটি মামলা করা হয়েছে। নির্বাচনে পরাজিত নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী ফরিদ মিয়া মামলাটি করেন।

গত ৭ ফেব্রুয়ারি মাইজবাগ ইউপির ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনের পর নানা অনিয়ম তুলে ধরে ফরিদ মিয়া নির্বাচন কমিশনে লিখিত অভিযোগ দেন। পরে তিনি বাদী হয়ে ২৯ মার্চ জেলার জ্যেষ্ঠ সহকারী জজ ও নির্বাচন ট্রাইব্যুনাল আদালতে একটি মামলা (২৭/২০২২) করেন। ২০ এপ্রিল মামলার শুনানির তারিখ ধার্য করেন আদালত।

মামলায় বিবাদী করা হয়েছে জাতীয় পার্টি (এরশাদ)–সমর্থিত বিজয়ী ইউপি চেয়ারম্যান ছাইদুল ইসলামসহ ১০ জনকে। অন্য বিবাদীদের মধ্যে রয়েছেন পরাজিত পাঁচ চেয়ারম্যান প্রার্থী, ভোটকেন্দ্রে দায়িত্ব পালনকারী তিনজন প্রিসাইডিং কর্মকর্তা ও নির্বাচন কর্মকর্তা।

গতকাল বুধবার দুপুরে যোগাযোগ করা হলে ফরিদ মিয়া বলেন, তিনি মামলার আবেদনের বাইরে কোনো মন্তব্য করবেন না। মামলার নথি সূত্রে জানা যায়, বিলরাউল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোটার সংখ্যা ১ হাজার ৮০৯। প্রিসাইডিং কর্মকর্তা কেন্দ্রের এজেন্টদের হাতে তাঁর স্বাক্ষরিত যে ফলাফল বিবরণের পাতা (শিট) দিয়েছেন, তাতে বৈধ ভোট সংখ্যা ১ হাজার ৪৩২টি ও বাতিল ভোটের সংখ্যা ৩৭৭টি। বাদীর প্রশ্ন, তাহলে কী এলাকার মৃত ব্যক্তিরাও ভোট দিয়েছেন? বাদী এই কেন্দ্রে নৌকা প্রতীকে ১০৫ ভোট পেয়েছেন। তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী পেয়েছেন ৮৯০ ভোট। এ ছাড়া দক্ষিণ দত্তগ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে বাদী ৬৭ ভোট ও লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী ১ হাজার ৫২০ ভোট পেয়েছেন। উত্তর দত্তগ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে বাদী ৫৬ ভোট ও লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী ১ হাজার ৩৫১ ভোট পেয়েছেন। অনিয়ম ও ব্যাপক কারচুপির মাধ্যমে এ ধরনের ফলাফল তৈরি করে তাঁকে (বাদী) মাত্র ছয় ভোটে পরাজিত দেখানো হয়েছে।

বিলরাউল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা মোহাম্মদ শামছুজ্জামানের মুঠোফোনে বলেন, ভোটকেন্দ্রের ফল শিটে বৈধ ভোটার সংখ্যা তিনি ঠিকই লিখেছেন। কিন্তু অবৈধ, বাতিল ও অনুপস্থিত ভোটার সংখ্যা তিনি ভুল করে একত্রে বাতিল কলামে লিখে ফেলেছেন। তবে তিনি উপজেলা সদরে পৌঁছে এ ভুল সংশোধন করে ফলাফল বিবরণী জমা দিয়েছেন। এ ঘটনায় নির্বাচন ট্রাইব্যুনালে একটি মামলা হয়েছে বলে শুনেছেন তিনি।

উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মাহবুবুল হক বলেন, শতভাগ ভোট পড়ার তথ্যটি ঠিক নয়। মামলা হওয়ার পর মাইজবাগ ইউপি নির্বাচনের ফলাফল বিবরণী পুনরায় দেখেছেন। তাতে শতভাগ ভোট পড়ার তথ্য খুঁজে পাননি। আদালতের সমন পেয়েছেন বলে জানান তিনি।