এখন থেকে ট্রাইসাইকেলে করে কলেজে যাবেন তিনি

আজিমুলকে নিয়ে গত ২৭ এপ্রিল ‘হেঁটে কলেজে পৌঁছাতে প্রায়ই দেরি হয়ে যায়’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয় প্রথম আলোয়।

ট্রাইসাইকেলে করে আজিমুল হক বাড়িতে যাচ্ছেন। গতকাল সকালে লালমনিরহাট শহরের বাহাদুর মোড়ে
ছবি: প্রথম আলো

লালমনিরহাটের শারীরিক প্রতিবন্ধী মেধাবী ছাত্র আজিমুল হক কলেজে যাতায়াত করার জন্য নতুন ট্রাইসাইকেল বুঝে পেয়েছে। গতকাল বুধবার সকালে জেলা শহরের বাহাদুর মোড় এলাকা থেকে ট্রাইসাইকেলে করে সে নিজের গ্রামের বাড়ির দিকে রওনা দেয়। এ সময় আজিমুলের বাবা মিন্টু মিয়া উপস্থিত ছিলেন।

সদর উপজেলার হারাটি ইউনিয়নের নামুড়ি হারাটি গ্রামে আজিমুলের বাড়ি। আজিমুল মহেন্দ্র নগর ইউনিয়নের ঢাকনাই টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র। বাড়ি থেকে প্রায় আড়াই কিলোমিটার দূরে অবস্থিত তার কলেজ। মেরুদণ্ড ও দুই পায়ের সমস্যার জন্য স্বাভাবিকভাবে হাঁটতে পারে না আজিমুল হক। অনেক কষ্ট করে পথে বারবার থেমে একটু বসে জিরিয়ে নিয়ে যেতে হয় কলেজে বা অন্য যেকোনো স্থানে।

অন্যের জমিতে বাড়ি করে থাকা আজিমুল হকের বাবা মিন্টু মিয়া রিকশাচালক। মাঝেমধ্যে তিনি সকালে বাড়ি থেকে কাজের উদ্দেশ্যে বের হওয়ার সময় আজিমুলকে কলেজে পৌঁছে দিয়ে যান। তবে ফেরার পথে আজিমুলকে কষ্ট করে হেঁটেই বাড়িতে আসতে হয়। আজিমুলের বিষয়ে প্রথম আলোর অনলাইনে গত ২৭ এপ্রিল ‘হেঁটে কলেজে পৌঁছাতে প্রায়ই দেরি হয়ে যায়’ শিরোনামে একটি সচিত্র বিশেষ প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।

এরপর আজিমুলকে একটা ট্রাইসাইকেল কিনতে সহায়তা করার জন্য এগিয়ে আসেন স্পেনের মাদ্রিদ শহরের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রবাসী নারী। তিনি মিন্টু মিয়াকে ৩০ হাজার টাকা দেন।

মিন্টু মিয়া বলেন, ট্রাইসাইকেল বানানোর কারখানায় গেলে জানতে পারেন, ৩০ হাজার টাকা দিয়ে যে নকশার গাড়ি বানাতে চান, সেটা বানানো সম্ভব নয়। পরে ৪৫ হাজার টাকা দিয়ে শহরের বায়জীত ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশপ থেকে এ ট্রাইসাইকেল তৈরি করা হয়। বাকি টাকা একটি বেসরকারি সংস্থা (এনজিও) থেকে ঋণ করে জোগাড় করেছেন। আজিমুল হক ও মিন্টু মিয়া সংবাদ প্রকাশের জন্য প্রথম আলো ও সহায়তা দেওয়া প্রবাসী নারীকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান।