কক্সবাজারে দুই সদস্য প্রার্থীর সংঘর্ষে যুবক নিহত, প্রার্থীসহ আহত ৬

সংঘর্ষে আহত এক ভোটারকে হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছে। আজ দুপুরে কক্সবাজার সদর উপজেলার খুরুশকুল ইউনিয়ন পরিষদের তেতৈয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে
ছবি: প্রথম আলো

কক্সবাজার সদর উপজেলার খুরুশকুল ইউনিয়ন পরিষদের ১ নম্বর ওয়ার্ডের তেতৈয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে আজ বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে দুই ইউপি সদস্য প্রার্থীর সমর্থকের মধ্যে সংঘর্ষ ও গোলাগুলির ঘটনায় আক্তারুজ্জামান পুতু (৩০) নামের এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। গুলিবিদ্ধ হয়েছেন ইউপি সদস্য প্রার্থীসহ অন্তত ছয়জন। ঘটনার পর থেকে ওই কেন্দ্রের ভোট গ্রহণ বন্ধ রাখা হয়েছে।

দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ঘটনাস্থল থেকে স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক (ডিডিএলজি) শ্রাবস্তী রায় প্রথম আলোকে বলেন, দুপক্ষের মারামারিতে একজনের মৃত্যু হয়েছে বলে হাসপাতাল থেকে তাঁকে জানানো হয়েছে। পরিস্থিতি প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। কিন্তু কেন্দ্রে ভোটার নেই। ভোটার এলে আবার ভোট গ্রহণ শুরু হবে।

জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা এস এম শাহাদাত হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, জাল ভোট দেওয়াকে কেন্দ্র করে দুই সদস্য প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে প্রথমে মারামারি লাগে বলে তিনি জানতে পেরেছেন। এরপর কেন্দ্রের বাইরে গিয়ে দুপক্ষের লোকজন সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এতে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে কয়েকজন আহত হন। কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নেওয়ার পর আক্তারুজ্জামান পুতু নামের এক যুবকের মৃত্যু হয়। তিনি ১ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার প্রার্থী শেখ কামালের চাচাতো ভাই।

খুরুশকুল ইউপির স্বতন্ত্র প্রার্থী নুরুল আমিন বলেন, ১ নম্বর ওয়ার্ডের দুই সদস্য প্রার্থী শেখ কামাল ও আবু বক্কর ছিদ্দিকের কর্মী–সমর্থকদের মধ্যে ওই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এর রেশ ধরে পাশের তিনটি কেন্দ্র মনুপাড়া, ডেইলপাড়া এবং গাজীর ডেইল কেন্দ্রে গোলযোগ ও সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

কেন্দ্রের কয়েকজন নির্বাচনী এজেন্ট বলেন, সদস্য প্রার্থী শেখ কামালের লোকজন বুথে ঢুকে ব্যালটে সিল মারার চেষ্টা করলে প্রতিদ্বন্দ্বী সদস্য প্রার্থী আবু বক্কর ছিদ্দিকের লোকজন তাঁদের ওপর হামলা চালান। এতে উভয়পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। সংঘর্ষে দুপক্ষই ধারালো অস্ত্র ব্যবহার করে। এ সময় কেন্দ্রের বাইরে গোলাগুলির শব্দ শোনা যায়। সংঘর্ষ ও গোলাগুলির ঘটনায় আতঙ্কিত ভোটাররা কেন্দ্র ছেড়ে চলে যান। বেলা ১টা পর্যন্ত কেন্দ্র ফাঁকা ছিল।

বৃহস্পতিবার সকাল আটটা থেকে কক্সবাজারের কক্সবাজার সদর, রামু ও উখিয়া উপজেলার ২১টি ইউনিয়নের ভোট গ্রহণ চলছে। জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা এস এম শাহাদাত হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, তিন উপজেলার ২১টি ইউনিয়নের ২০৩টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ১১৭টি কেন্দ্র ছিল ঝুঁকিপূর্ণ। ভোটকেন্দ্র দখল এবং ব্যালটে সিল মারার ঝুঁকি এড়াতে অধিকাংশ কেন্দ্রে ব্যালট পেপার পৌঁছানো হয় আজ সকালে। রক্তপাতহীন উৎসবমুখর একটি নির্বাচন চেয়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু খুরুশকুলের ঘটনায় তা আর সম্ভব হলো না।

গত ২০ সেপ্টেম্বর প্রথম ধাপের নির্বাচনে মহেশখালী ও কুতুবদিয়ায় ভোটকেন্দ্র দখল এবং ব্যালটে সিল মারাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ ও গোলাগুলিতে দুই ব্যক্তি নিহত হয়েছিলেন।