সিলেটে করোনা চিকিৎসার জন্য নির্ধারিত হাসপাতালগুলোতে কমছে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী জেলায় করোনা সংক্রমিতদের মধ্যে সোমবার সকাল আটটা পর্যন্ত ৬২ জন বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। এমন অবস্থায় সিলেটের বেসরকারি একটি হাসপাতালে নতুন করে কোভিড রোগী ভর্তি না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
সিলেট বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, সিলেট জেলায় হাসপাতালগুলোতে ক্রমান্বয়ে কোভিড রোগীর ভর্তিসংখ্যা কমছে। ১৬ সেপ্টেম্বর সকাল আটটার হিসাবে জেলার হাসপাতালগুলোতে করোনায় আক্রান্ত রোগী ভর্তি ছিল ৮৯ জন। এর পরদিন গত বৃহস্পতিবার হাসপাতালে রোগী ভর্তি ছিলেন ৮৬ জন, শুক্রবার ছিল ৭০ জন, শনিবার ছিল ৬৭ জন, রোববার এ সংখ্যা একজন কমে ৬৬ জন এবং সোমবার এ সংখ্যা ছিল ৬২ জন।
রোববার সিলেটের দক্ষিণ সুরমার নর্থ ইস্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নতুন করোনা রোগী ভর্তি না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন হাসপাতালের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম। গত ১ জুলাই থেকে করোনায় আক্রান্তদের চিকিৎসা শুরু করেছিল তারা। হাসপাতালের ২০০ শয্যা করোনা চিকিৎসার জন্য নির্ধারণ করা হয়েছিল।
জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম জানান, শুধু করোনা পজিটিভ রোগীদের নতুন করে ভর্তি বন্ধ করা হয়েছে। করোনা রোগী কমে যাওয়ায় এ সিদ্ধান্ত। তবে হাসপাতালে করোনার আইসোলেশন সেন্টার চালু থাকবে। এতে করোনা উপসর্গ নিয়ে আসা রোগীদের ভর্তি করা হবে। তিনি জানান, হাসপাতালে করোনা ইউনিট চালুর পর করোনা উপসর্গ এবং করোনায় আক্রান্ত মিলিয়ে ১ হাজার ৪০ জন চিকিৎসা নিয়েছেন। বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ২১ জন, এর মধ্যে পাঁচজন করোনা পজিটিভ। তাঁদের করোনা আইসোলেশন সেন্টারে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। নতুন করোনা রোগী ভর্তি বন্ধ ঘোষণার পর হাসপাতালে নিয়মিত রোগী ভর্তি এবং বহির্বিভাগ পুরোদমে চালু করার প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে। হাসপাতালের বহির্বিভাগ ও অন্তর্বিভাগের সব কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। আগের মতো সকাল ও বিকেলে কনসালট্যান্টরা বহির্বিভাগে রোগী দেখা শুরু করেছেন।
তবে সিলেটের মাউন্ট এডোরা নামের বেসরকারি হাসপাতালটিতে করোনার চিকিৎসা অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. রাশেদুল ইসলাম। তিনি জানান, সোমবার বেলা ৩টা পর্যন্ত হাসপাতালে ৯ জন করোনা রোগী এবং ২৭ জন রোগী উপসর্গ নিয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। হাসপাতালে করোনা ইউনিটে শয্যাসংখ্যা রয়েছে ৫৩। এ ছাড়া হাসপাতালে অন্য বিভাগগুলোতেও স্বাভাবিক কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।
এদিকে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপপরিচালক হিমাংশু লাল রায় বলেন, ‘হাসপাতালে করোনা উপসর্গ নিয়ে আসা রোগীর সংখ্যা কমলেও এখন পর্যন্ত করোনা ইউনিট বন্ধ করার সিদ্ধান্ত হয়নি। আমরা করোনায় আক্রান্ত রোগীদের শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালে রেফার করছি। বর্তমানে হাসপাতালে ৫৫ জন করোনা উপসর্গ নিয়ে ভর্তি রয়েছেন।’
সিলেট শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) চয়ন রায় বলেন, কয়েক দিন ধরে হাসপাতালে করোনা রোগীর সংখ্যা কমছে। সপ্তাহখানেক আগে প্রতিদিন ৮০ জনের মতো রোগী ভর্তি থাকলেও বর্তমানে এই সংখ্যা ৫০–এর নিচে নেমে এসেছে। সোমবার বেলা দুইটা পর্যন্ত হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন ৪৪ জন রোগী। এর মধ্যে করোনায় আক্রান্ত ছিলেন ৩৫ জন এবং উপসর্গ নিয়ে ভর্তি ছিলেন ৯ জন।