কলারোয়ায় গরুর গাড়িতে করে এসে শপথ নিলেন ইউপি সদস্যরা

সুসজ্জিত গরুর গাড়িতে করে এসে শপথ নিয়েছেন কলারোয়া উপজেলার হেলাতলা ইউপির নবনির্বাচিত ওয়ার্ড সদস্যরা। বুধবার বিকেলেপ্রথম আলো

গ্রামবাংলার হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্য গরুর গাড়িতে চড়ে শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে এলেন নবনির্বাচিত ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্যরা। সাতক্ষীরা কলারোয়া উপজেলার হেলাতলা ইউপি নির্বাচনে বিজয়ী সংরক্ষিত ওয়ার্ডের মহিলা সদস্য ও সাধারণ সদস্যরা এ কাজ করেন। আজ বুধবার বিকেল চারটায় কলারোয়া উপজেলা প্রশাসন এ শপথ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

উপজেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, বিকেল চারটায় উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে কলারোয়া উপজেলার ১২টি ইউনিয়নের মধ্যে ৯টি ইউপির সংরক্ষিত মহিলা সদস্য ও সাধারণ সদস্যদের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। কলারোয়া উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জুবায়ের হোসেন চৌধুরী ইউপি সদস্যদের শপথ পাঠ করান। এ সময় অতিথি হিসেবে কলারোয়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আমিনুল হক, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান শাহনাজ নাজনীন, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবদুল হামিদ, কৃষি কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে ২৭ জন সংরক্ষিত ওয়ার্ডের মহিলা সদস্যসহ ১০৮ জন ইউপি সদস্য উপস্থিত ছিলেন।

কলারোয়ায় আজ ২৭ জন সংরক্ষিত ওয়ার্ডের মহিলা সদস্যসহ ১০৮ জন ইউপি সদস্যের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান হয়। এর মধ্যে হেলাতলা ইউপির ১২ জন ওয়ার্ড সদস্য গরুর গাড়িতে চড়ে যোগ দেন শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে।

এর আগে সকালে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের মিলনায়তনে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হ‌ুমায়ূন কবির কলারোয়া উপজেলার ওই ইউপির নবনির্বাচিত চেয়ারম্যানকে শপথ পাঠ করান।

কলারোয়া উপজেলার হেলাতলা ইউপির ১২ জন ইউপি সদস্য চারটি সুসজ্জিত গরুর গাড়িতে চড়ে যোগ দেন শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে। বুধবার বিকেলে
প্রথম আলো

ইউপি সদস্যদের শপথ অনুষ্ঠানে উপজেলার হেলাতলা ইউপির ১২ জন ওয়ার্ড সদস্য গরুর গাড়িতে করে আসেন। এ জন্য চারটি গরুর গাড়ি সুসজ্জিত করা হয়। হেলাতলা ইউপিতে এবার নিয়ে চারবার নির্বাচিত চেয়ারম্যান মোয়াজ্জেম হোসেন একটি গরুর গাড়ির সামনে বসে অন্য সদস্যদের নিয়ে কলারোয়া উপজেলা মিলনায়তনে আসেন।

মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, তাঁর শপথ অনুষ্ঠান হয়েছে আজ সকাল নয়টায় সাতক্ষীরার জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের মিলনায়তনে। সেখানে ইউপি সদস্যদের যাওয়ার সুযোগ ছিল না। সদস্যদের শপথ অনুষ্ঠানটি স্মরণীয় করে রাখার জন্য তিনি এ উদ্যোগ নিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘গরুর গাড়ি হচ্ছে আমাদের গ্রামবাংলার ঐতিহ্য। একসময় গ্রামের প্রধান বাহন ছিল গরুর গাড়ি। গ্রামের অবস্থাপন্ন বাড়ির নারীসহ মাতবররা ছইতোলা গরুর গাড়িতে করে যাতায়াত করতেন।’

মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, ‘ইউপি সদস্যদের দায়িত্ব বুঝে নেওয়ার আগে ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের মধ্য দিয়ে নিয়ে আসার মাধ্যমে মানুষের সঙ্গে নিবিড় হওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। সদস্যরা যাতে আগামী দিনগুলোতে মানুষের পাশে থাকেন। মানুষের যেকোনো সমস্যায় তাঁরা ব্যথিত হন, পাশে দাঁড়ান।’