আসামি আশিকুরকে নির্দোষ দাবি করে পরিবারের সংবাদ সম্মেলন

কুমিল্লা সিটির কাউন্সিলর মো. সোহেল ও সহযোগী হরিপদ সাহা হত্যা মামলার ৬ নম্বর আসামি আশিকুর রহমান ওরফে রকিকে নির্দোষ দাবি করে পরিবারের সংবাদ সম্মেলন। মঙ্গলবার বিকেলে
প্রথম আলো

কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. সোহেল ও সহযোগী হরিপদ সাহা হত্যা মামলার ৬ নম্বর আসামি আশিকুর রহমান ওরফে রকিকে নির্দোষ দাবি করে সংবাদ সম্মেলন করেছেন তাঁর পরিবারের সদস্যরা। আজ মঙ্গলবার বিকেল পাঁচটার দিকে নগরের নানুয়া দিঘির পাড়ের একটি ভাড়া বাসায় ওই সংবাদ সম্মেলন হয়। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন আশিকুরের স্ত্রী জান্নাতুল ফেরদৌস। এ সময় উপস্থিত ছিলেন আশিকুরের বাবা আনোয়ার হোসেন ও মা রানু বেগম।

২৭ নভেম্বর র‍্যাব-১১ ক্রাইম প্রিভেনশন কোম্পানি-২ কুমিল্লার সদস্যরা আশিকুরকে লালমনিরহাট জেলার চণ্ডীবাজার থেকে গ্রেপ্তার করে। এ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে আশিকুরের বাবা আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘চার বছর ধরে রকি (আশিকুর রহমান) রাজগঞ্জ বাজারে ব্যবসা করত। ঘটনার দিন ও ঘটনার পরের দিনও সে বাজারের দোকানে ব্যবসা করেছে। মামলার এজাহারে নাম আসার পর ভয়ে পালিয়ে যায়। পরে র‍্যাব তাকে লালমনিরহাট থেকে গ্রেপ্তার করে।’

আরও পড়ুন

আশিকুরের মা রানু বেগম বলেন, ‘মামলার বাদী সৈয়দ মো. রুমনের সঙ্গে আশিকুরের ভালো সম্পর্ক। একসঙ্গে এলাকায় ওরা খেলাধুলা করত। কারও প্ররোচনায় আমার ছেলের নাম মামলায় ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। আমি এর তদন্ত চাই।’

ঘটনার সময় আশিকুর রাজগঞ্জ বাজারে রকি স্টোরে ছিল। বাজারের ব্যবসায়ী ও সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ দেখলে তা জানা যাবে। এই হত্যাকাণ্ডের পর গতকাল সোমবার আমাদের পাথুরিয়াপাড়ার বাড়িতে ভাঙচুর করা হয়। আমরা প্রশাসনের কাছে সুষ্ঠু তদন্ত করে এই ঘটনার বিচার চাই।
জান্নাতুল ফেরদৌস, আসামি আশিকুর রহমানের স্ত্রী

সংবাদ সম্মেলনে আশিকুরের স্ত্রী জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, ‘আমার স্বামী আশিকুর রহমান রকি ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের একজন বাসিন্দা ও নগরের রাজগঞ্জ বাজারের ব্যবসায়ী। সম্প্রতি ১৭ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. সোহেল এক নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার হন, যার জন্য আমরা শোকাহত। তাঁর হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক, এটা কামনা করি। কিন্তু কাউন্সিলর সোহেল হত্যা মামলায় আমার স্বামীকে আসামি করা হয়। এতে আমরা হতবাক হয়ে যাই। আমার শ্বশুর ও আমার স্বামীর সঙ্গে কাউন্সিলর সোহেলের কোনো দ্বন্দ্ব ছিল না। ঘটনার সময় আশিকুর রাজগঞ্জ বাজারে রকি স্টোরে ছিল। বাজারের ব্যবসায়ী ও সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ দেখলে তা জানা যাবে। এই হত্যাকাণ্ডের পর গতকাল সোমবার আমাদের পাথুরিয়াপাড়ার বাড়িতে ভাঙচুর করা হয়। আমরা প্রশাসনের কাছে সুষ্ঠু তদন্ত করে এই ঘটনার বিচার চাই। অন্যায়ভাবে কাউকে যেন হয়রানি করা না হয়।’

আরও পড়ুন

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ২২ নভেম্বর বিকেল সাড়ে চারটায় কুমিল্লা নগরের পাথুরিয়াপাড়া থ্রিস্টার এন্টারপ্রাইজ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. সোহেল ও তাঁর সহযোগী হরিপদ সাহাকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এ সময় আরও পাঁচজন গুলিবিদ্ধ হন। এই ঘটনায় ২৩ নভেম্বর রাত সোয়া ১২টায় কাউন্সিলর মো. সোহেলের ছোট ভাই সৈয়দ মো. রুমন বাদী হয়ে ১১ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও ৮ থেকে ১০ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন। আজ পর্যন্ত এজাহারনামীয় পাঁচজন ও সন্দেহভাজন একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। দুজন এজাহারনামীয় আসামি গতকাল মধ্যরাতে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ মারা যান।

আরও পড়ুন

সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ প্রসঙ্গে কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনওয়ারুল আজিম বলেন, আশিকুর মামলার এজাহারনামীয় আসামি। পুলিশ পুরো মামলাটি তদন্ত করছে।