সারদা সুন্দরী মহিলা কলেজ
কাটা হলো গাছের মাথা, জানেন না অধ্যক্ষ
কলেজের ইলেকট্রিক মিস্ত্রি শফিকুল ইসলাম বলেন, গাছের ডালগুলোর কারণে আলো দেখা যায় না বিধায় অধ্যক্ষ বলেছেন ডালগুলো কেটে দিতে।
ফরিদপুর শহরের সরকারি সারদা সুন্দরী মহিলা কলেজের ভেতরের হোস্টেলের সামনে থাকা ছয়টি বড় মেহগনিগাছের মাথাসহ ডাল কেটে নেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। গতকাল শুক্রবার সরকারি ছুটির দিনে খুব ভোরে গাছের মাথাগুলো সবার অগোচরে কাটা হয়। এরপর কয়েকটি ভ্যানে করে পাতা দিয়ে ঢেকে গাছের গুঁড়িগুলো নিয়ে যান ওই কলেজের কয়েকজন কর্মচারী।
গাছ কাটার বিষয়ে কলেজের অধ্যক্ষ কাজী গোলাম মোস্তফা ও হোস্টেলের সুপারের দাবি, গাছ কাটার বিষয়ে তাঁরা কিছু জানেন না।
সারদা সুন্দরী মহিলা কলেজ ফরিদপুর জেলার নারী শিক্ষার জন্য একটি প্রধান বিদ্যাপীঠ। মুক্তিযুদ্ধে শহীদ শিক্ষানুরাগী চন্দ্রকান্ত নাথের উদ্যোগে ১৯৬৬ সালে এটি প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৮০-এ কলেজটি জাতীয়করণ করা হয়।
গতকাল কলেজের পূর্ব পাশের হোস্টেলের সামনে থাকা চারটি মেহগনিগাছের মাথা ও ডাল কাটা হয়। এ ছাড়া পশ্চিম পাশের আরও দুটি গাছের বিশাল আকারের ডাল কেটে ফেলা হয়েছে। কলেজসংলগ্ন একটি বিপণিবিতানের দায়িত্বে নিয়োজিত সিকিউরিটি গার্ড নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, সকালে তিনটি ভ্যানে করে গাছের বড় কয়েকটি অংশ নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ভ্যানের ওপর থাকা গাছের গুঁড়িগুলোকে পাতা দিয়ে ঢেকে নিয়ে যাওয়া হয়, যাতে কেউ সন্দেহ না করে।
গাছ বহনকারী শহরের বায়তুল আমান এলাকার বাসিন্দা ভ্যানচালক রাসেল বলেন, কলেজের ইলেকট্রিক মিস্ত্রি তাঁকে গাছের গুঁড়িগুলো নিয়ে যেতে বলেছেন। গাছের গুঁড়িগুলো কেন পাতা দিয়ে ঢেকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, তার কোনো সদুত্তর ভ্যানচালক রাসেল দিতে পারেননি।
ওই কলেজের ইলেকট্রিক মিস্ত্রি শফিকুল ইসলাম বলেন, হোস্টেলের সামনে লাইট লাগানো হচ্ছে। গাছের ডালগুলোর কারণে আলো ঠিকমতো দেখা যায় না বিধায় অধ্যক্ষ বলেছেন ডালগুলো কেটে দিতে। তাই ডালগুলো কাটা হয়েছে। গাছের মাথা কেটে নেওয়ার কারণ কী, প্রশ্নে শফিকুল ইসলাম বলেন, এগুলো মেহগনিগাছের ডাল।
কলেজের হোস্টেল সুপার মো. আজগর আলী বলেন, ‘আমি সারা দিনই কলেজে ছিলাম। গাছ কাটার বিষয়টি আমি জানি না। তবে গাছের কিছু ডাল কাটা হয়েছে বলে শুনেছি।’
গাছ কাটার বিষয়ে কলেজের অধ্যক্ষ কাজী গোলাম মোস্তফা বলেন, গাছ কাটার বিষয়ে তিনি কাউকে কিছু বলেননি। তা ছাড়া গাছ কাটার বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না। ‘গাছ কেটে ফেলা হলে অন্যায় করা হয়েছে’ মন্তব্য করে অধ্যক্ষ বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।