কাদেরের ভাই–ভাগনের কর্মসূচি, কোম্পানীগঞ্জের রংমালায় ১৪৪ ধারা
নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার রামপুর ইউনিয়নের রংমালা বাজার ও আশপাশের ৫ কিলোমিটার এলাকায় ১৪৪ ধরা জারি করা হয়েছে। আজ রোববার সকাল ছয়টা থেকে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত সব ধরনের সভা-সমাবেশ ও জমায়েত নিষিদ্ধ করে এ আদেশ জারি করেছে উপজেলা প্রশাসন। গতকাল শনিবার রাত ১০টার দিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জিয়াউল হক মীর এ আদেশ জারি করেন।
রংমালা দারুস সুন্নাহ সিনিয়র মডেল মাদ্রাসার ব্যবস্থাপনা কমিটি নিয়ে নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের দুই পক্ষ আজ রোববার সকাল ১০টায় পাল্টাপাল্টি প্রতিবাদ সমাবেশ করার ঘোষণা দেয়। পরে প্রশাসন এ পদক্ষেপ নেয়।
প্রশাসনের ১৪৪ ধারা জারির পর ওবায়দুল কাদেরের ভাগনে ও উপজেলা আওয়ামী লীগের মুখপাত্র মাহবুবুর রশিদ রংমালা মাদ্রাসা মাঠে তাঁদের পূর্বনির্ধারিত প্রতিবাদ সমাবেশ কর্মসূচি স্থগিত করেছেন। অপর দিকে মাহবুব রশিদের প্রতিপক্ষ ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই আবদুল কাদের মির্জা তাঁর পূর্বঘোষিত প্রতিবাদ সমাবেশ রংমালা থেকে উপজেলা সদরে বসুরহাট পৌরসভা মিলনায়তনে স্থানান্তর করেছেন।
বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জা মাদ্রাসার ব্যবস্থাপনা কমিটি থেকে তাঁর অনুসারীকে বাদ দেওয়ার অভিযোগ এনে গত শুক্রবার বিকেলে প্রতিবাদ সমাবেশ করার ঘোষণা দেন। অন্যদিকে মাদ্রাসার অধ্যক্ষকে গালাগাল ও অপমান করার অভিযোগ এনে শুক্রবার রাতে পাল্টা কর্মসূচি ঘোষণা করেন মাহবুবুর রশিদ। এর ফলে কয়েক দিন কিছুটা শান্ত থাকার পর আবারও কোম্পানীগঞ্জের রাজনীতি সংঘাতপূর্ণ হয়ে ওঠার আশঙ্কা দেখা দেয়।
উপজেলা আওয়ামী লীগের মুখপাত্র মাহবুবুর রশিদ প্রথম আলোকে বলেন, মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের বিধিবিধান মেনে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ তাঁকে সভাপতি নির্বাচিত করেন। কিন্তু কাদের মির্জা তাঁর স্বভাবগত রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে বিষয়টি নিয়ে রাজনীতি শুরু করেন। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা প্রশাসনের সিদ্ধান্তের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। ১৪৪ ধারা জারির কারণে আমরা আমাদের কর্মসূচি স্থগিত রাখব।’
কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন আনোয়ার প্রথম আলোকে বলেন, কোনো পক্ষই যাতে ওই এলাকায় কোনো ধরনের সভা-সমাবেশ ও জমায়েত করতে না পারে, সেটি নিশ্চিত করতে সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন আছে।
এদিকে জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, কোম্পানীগঞ্জে কর্মসূচির পরিপ্রেক্ষিতে সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে জেলা পুলিশ লাইনস থেকে অতিরিক্ত পুলিশ পাঠানো হয়েছে।
১৪৪ ধারা জারির বিষয়টি নিশ্চিত করে কোম্পানীগঞ্জের ইউএনও জিয়াউল হক মীর বলেন, একই দিনে একই স্থানে আওয়ামী লীগের বিবদমান দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচির কারণে সংঘাত এড়াতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।