ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার সহনাটি ইউপি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর বিরুদ্ধে ভোট কারচুপির অভিযোগ তুলে পুনরায় ভোট গণনার দাবি জানিয়েছেন জাতীয় পার্টির (জাপা) প্রার্থী শামছুজ্জামান জামাল। আজ মঙ্গলবার দুপুরে ময়মনসিংহ প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে তিনি এ দাবি জানান।
সংবাদ সম্মেলনে শামছুজ্জামান জামাল বলেন, ‘গত রোববার নির্বাচনের দিন শুরু থেকেই আওয়ামী লীগের প্রার্থী সালাহউদ্দিন কাদের ওরফে রুবেলের কর্মীরা বিভিন্ন কেন্দ্র দখল করে আমার এজেন্টদের বের করে দেন। পরে তাঁরা বিভিন্ন কেন্দ্রে ব্যাপকভাবে জাল ভোট দেন। বিশেষ করে ভালুকাপুর, ধোপাজাঙ্গালিয়া, পল্টিপাড়া ও রাইশিমুল কেন্দ্রে এই অনিয়ম বেশি করা হয়। ভোট শুরুর পর থেকে বিকেল চারটা পর্যন্তই চলে ভোট জালিয়াতি। এমন অনিয়মের পরে গণনার সময়ও চলে কারচুপি।’
জাপার প্রার্থী শামছুজ্জামান জামাল আরও বলেন, ‘ভালুকাপুর কেন্দ্রে নৌকার প্রার্থী প্রকৃতপক্ষে ১ হাজার ৭২৯ ভোট পেয়েছেন। কিন্তু কারচুপির মাধ্যমে সেটা দেখানো হয়েছে ১ হাজার ৮৯৯ ভোট। ফলে আমি ২৬ ভোটে হেরে যাই। ভোটের প্রকৃত হিসাবে আমার ভোট নৌকার প্রার্থীর চেয়ে অনেক বেশি হবে। ভোট গণনার সময় বিদ্যুৎ সংযোগ বিছিন্ন করে এই কারচুপি করা হয়। পুরো ইউনিয়নের মানুষ সেসব অনিয়মের সাক্ষী। আমি সহনাটি ইউনিয়নে পুনরায় ভোট গণনার দাবি জানাই।’
সংবাদ সম্মেলনের একপর্যায়ে কেঁদে ফেলেন জাতীয় পার্টির এই প্রার্থী। তিনি বলেন, ‘আমার বয়স হয়েছে। এটাই হয়তো জীবনের শেষ নির্বাচন। আমি জনগণের অনুরোধে নির্বাচন করেছি। জনগণ আমাকে ভোট দিলেও কারচুপির মাধ্যমে আমাকে পরাজিত করা হয়েছে। নির্বাচন চলাকালেই আমি ভালুকাপুর কেন্দ্র দখল ও জাল ভোট দেওয়ার বিষয়ে রির্টানিং কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ করেছি।’
ভোট কারচুপির অভিযোগের বিষয়ে কথা বলার জন্য আজ দুপুরে সহনাটি ইউপি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিজয়ী চেয়ারম্যান প্রার্থী সালাহউদ্দিন কাদেরের মুঠোফোনে ফোন করা হলে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।
আজ সকাল থেকে সহনাটি ইউপির সব কেন্দ্রের ভোট পুনরায় গণনা করার দাবিতে গৌরীপুর উপজেলা সদরে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন জাপার প্রার্থীর সমর্থকেরা। তাঁরা উপজেলা পরিষদের পাশের সড়কে অবস্থান নেন। সেখানে পুলিশের কড়া পাহারার মধ্যে তাঁরা পুনরায় ভোট গণনার দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দেন। পরে গৌরীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) ঘটনাস্থলে এসে তাঁদের সড়ক থেকে চলে যেতে বলেন। এ সময় তাঁরা ভোট পুনরায় গণনার দাবিতে ইউএনওকে একটি স্মারকলিপি দেন।
এ বিষয়ে ইউএনও হাসান মাসুদ বলেন, ‘সহনাটি ইউনিয়নের ভোট পুনরায় গণনার দাবিতে তাঁর কাছে একটি স্মারকলিপি দিয়েছে জাপার প্রার্থীর সমর্থকেরা। আমি সেটি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠাব।’