পিরোজপুরের টোনা খাল
কার্যাদেশ হলেও সেতু নির্মাণ শুরু হয়নি
লোহার সেতুটি প্রায় চার বছর আগে ভেঙে পড়ে। এরপর থেকে তিন গ্রামের মানুষ খেয়ায় পারাপার হচ্ছে।
পিরোজপুর সদর উপজেলার টোনা খালের ঋষিবাড়ি এলাকায় লোহার সেতুটি প্রায় চার বছর আগে ভেঙে পড়ে। এরপর থেকে স্থানীয় তিন গ্রামের মানুষ খেয়ায় নদী পারাপার হয়ে আসছে। তিন মাস আগে সেখানে নতুন গার্ডার সেতু নির্মাণের কার্যাদেশ দেওয়া হয়। কিন্তু এখনো কাজ শুরু হয়নি। ফলে এলাকাবাসীর দুর্ভোগ দূর হচ্ছে না।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) পিরোজপুর সদর উপজেলার প্রকৌশলীর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এক দশক আগে সদর উপজেলার টোনা খালের ঋষিবাড়ি এলাকার ৫১ মিটার দৈর্ঘ্যের একটি লোহার সেতু নির্মাণ করা হয়। কয়েক বছর পর সেতুটি বালুবাহী কার্গোর ধাক্কায় নড়বড়ে হয়ে পড়ে। ২০১৭ সালের শেষ দিকে সেতুটি ভেঙে খালের ভেতর পড়ে। এলজিইডি গত ২৩ জুন পাঁচ কোটি টাকা ব্যয়ে গার্ডার সেতু নির্মাণের জন্য চট্টগ্রামের প্রতিষ্ঠান মেসার্স ইউনুস অ্যান্ড ব্রাদার্সকে কার্যাদেশ দেয়। এক বছরের মধ্যে কাজ শেষ করতে হবে।
গত রোববার সরেজমিনে দেখা যায়, লোহার সেতুটি সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়ে গেছে। সেতু এলাকায় ডিঙিনৌকায় পারাপার হচ্ছে শিক্ষার্থীসহ এলাকার লোকজন।
খেয়ানৌকার মাঝি দেলোয়ার হোসেন হাওলাদার বলেন, সেতুটি দিয়ে উত্তর-পূর্ব টোনা, চল্লিশা, কুন্ডু বাড়ি গ্রামের লোকজন দাউদপুর বাজারে যাওয়া-আসা করেন। এ ছাড়া পুখুরিয়া বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও চলপুখুরিয়া টেকনিক্যাল কলেজের শিক্ষার্থীরা খেয়া পার হয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যায়। প্রতিদিন ৪০০ থেকে ৫০০ মানুষ খেয়া পারাপার হন।
কার্যাদেশ দেওয়ার পরও কাজ শুরু হয়নি। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে দ্রুত কাজ শুরু করার জন্য চিঠি দেওয়া হয়েছে।হরষিত সরকার, সদর উপজেলা প্রকৌশলী
উত্তর-পূর্ব টোনা গ্রামের বাইতুন নূর জামে মসজিদের ইমাম মিকাইল হোসাইন বলেন, উত্তর-পূর্ব টোনা গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ খেয়া পারাপার হয়ে হাটবাজারে যান। সেতু না থাকায় কৃষিপণ্য ও মালামাল সরাসরি যানবাহনে করে হাটবাজারে নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। দ্রুত সেতু নির্মাণ করা হলে মানুষের কষ্ট লাঘব হবে।
ঝুঁকি নিয়ে খেয়া পারাপার হতে হয় বলে জানায় পুখুরিয়া বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয় ছাত্রী মিম আক্তার। সে জানায়, এলাকার মানুষ ও শিক্ষার্থীদের ডিঙিনৌকায় পারাপার করা হয়। অনেক সময় নৌকায় বেশি যাত্রী উঠলে ভয় করে।
টোনা ইউপি চেয়ারম্যান ইমরান আলম খান বলেন, শুনেছি, সেতুটির কার্যাদেশ দেওয়া হয়েছে। দ্রুত সেতুটির নির্মাণকাজ শুরু করার দাবি জানাচ্ছি।’ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স ইউনুস অ্যান্ড ব্রাদার্সের নথিতে টেলিফোন নম্বরে যোগাযোগ করলেও কেউ ফোন ধরেননি।
এ বিষয়ে সদর উপজেলা প্রকৌশলী হরষিত সরকার বলেন, কার্যাদেশ দেওয়ার পরও কাজ শুরু হয়নি। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে দ্রুত কাজ শুরু করার জন্য চিঠি দেওয়া হয়েছে।