সাতক্ষীরা কালীগঞ্জে বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে মানববন্ধন। বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলা পরিষদের সামনে
প্রথম আলো

দেশের প্রথম বাল্যবিবাহমুক্ত উপজেলা সাতক্ষীরার কালীগঞ্জে আবার শুরু হওয়া বাল্যবিবাহ বন্ধে প্রশাসনের পদক্ষেপের দাবিতে মানববন্ধন হয়েছে। প্রেরণা নারী উন্নয়ন সংগঠন ও ইয়ুথ ভলান্টিয়ার এনগেজমেন্ট কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট (সিওয়াইবি)—এই দুই স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের আয়োজনে আজ বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কালীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সামনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন প্রেরণা নারী উন্নয়ন সংগঠনের নির্বাহী পরিচালক শম্পা গোস্বামী। প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন কালীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সাঈদ মেহেদী। আরও বক্তব্য দেন কালীগঞ্জের রতনপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আশরাফুল ইসলাম, সাতক্ষীরা থেকে প্রকাশিত দৈনিক দক্ষিণের মশাল পত্রিকার সম্পাদক আশেক-ই-এলাহী, সাতক্ষীরা জেলা পরিষদ সদস্য শাহনেওয়াজ পারভীন, কালীগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি সাইফুল বারী, সাধারণ সম্পাদক সুকুমার দাস, সিওয়াইবি স্বেচ্ছাসেবক তুহিন হোসেন প্রমুখ। মানববন্ধন সঞ্চালনা করেন প্রেরণা নারী উন্নয়ন সংগঠনের অ্যাডভোকেসি অ্যাডভাইজার শেখ ফারুক হোসেন।

২০১৫ সালের ২৩ মার্চ বাংলাদেশের প্রথম বাল্যবিবাহমুক্ত উপজেলা হিসেবে সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ উপজেলাকে ঘোষণা করা হয়েছিল। কিন্তু বর্তমানে কালীগঞ্জে আবার ব্যাপকভাবে বাল্যবিবাহ হচ্ছে।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ২০১৫ সালের ২৩ মার্চ বাংলাদেশের প্রথম বাল্যবিবাহমুক্ত উপজেলা হিসেবে সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ উপজেলাকে ঘোষণা করা হয়েছিল। কিন্তু কিছুদিন পর আবারও বাল্যবিবাহ শুরু হয়। বর্তমানে ব্যাপকভাবে কালীগঞ্জে বাল্যবিবাহ হচ্ছে। জনপ্রতিনিধিরা ভোট হারানোর ভয়ে বাল্যবিবাহে বাধা না দিয়ে সহযোগিতা করেন। বিশেষ করে করোনাকালেও কালীগঞ্জসহ সাতক্ষীরা জেলায় অনেক বাল্যবিবাহ সংঘটিত হয়েছে। ৪২ সদস্যবিশিষ্ট উপজেলা বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ কমিটি যথাযথ ভূমিকার রাখতে ব্যর্থ হলে বাল্যবিবাহ বন্ধ হওয়া কঠিন। যেন কোনো শিশু অন্য একটি শিশুর মা না হয়। যেন একটি শিশুর অকালে মৃত্যু না হয়। বক্তারা কালীগঞ্জকে আবার বাল্যবিবাহমুক্ত উপজেলা করতে অবিলম্বে প্রশাসনকে কঠোর হওয়ার আহ্বান জানান।

বক্তারা আরও বলেন, করোনাকালে বিদ্যালয় বন্ধ থাকায় প্রতিটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির ছাত্রীদের আশঙ্কাজনক হারে বিয়ে হয়েছে। এ ব্যাপারে অভিভাবকদের পাশাপাশি ছাত্রছাত্রীদের সচেতন করতে হবে। তা না হলে সর্বক্ষেত্রে বাংলাদেশ পিছিয়ে পড়বে। নারী নির্যাতন ও বহুবিবাহ বাড়বে। বাল্যবিবাহ বন্ধের জন্য প্রশাসনকে উদ্যোগ নিতে হবে।

মানববন্ধন শেষে এ–সম্পর্কিত একটি স্মারকলিপি কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক বরাবর পেশ করা হয়।