ইউপি নির্বাচন
কালীগঞ্জে বিদ্রোহী নিয়ে বিপাকে আওয়ামী লীগ
২৮ নভেম্বর ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে আটটি ইউপিতে নির্বাচন হবে। এর মধ্যে সাতটি ইউপিতেই আওয়ামী লীগের ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী আছেন।
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটি ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী না হওয়ার জন্য কঠোর সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা জানিয়েছিল। কিন্তু ওই সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার সাতটি ইউনিয়নে আটজন ‘বিদ্রোহী’ চেয়ারম্যান প্রার্থী হয়েছেন। দলের ভোট ভাগ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকায়, বিদ্রোহী প্রার্থীদের নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থীরা।
দলীয় সূত্র আরও জানা গেছে, কালীগঞ্জের ১১টি ইউনিয়নের মধ্যে সুন্দরপুর দুর্গাপুর, বারোবাজার ও রায়গ্রাম ইউনিয়নের তিন প্রার্থী বিনা ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন। ২৮ নভেম্বর অনুষ্ঠেয় সাতটি ইউনিয়নে নৌকা প্রার্থীর সঙ্গে বিদ্রোহী চেয়ারম্যান প্রার্থীদের লড়াই হবে হাড্ডাহাড্ডি। বিদ্রোহী প্রার্থীদের দল থেকে বহিষ্কার ও ভোটে জয়লাভ করলেও, দলে আর জায়গা না দেওয়ার বিষয়ে কেন্দ্রীয় কমিটির কঠোর নির্দেশনা রয়েছে। কিন্তু কালীগঞ্জে বিদ্রোহী প্রার্থীদের বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। আর এই কারণে নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থীরা বিপাকে পড়েছেন।
উপজেলা নির্বাচন কার্যালয় সূত্র জানায়, কালীগঞ্জ উপজেলার জামাল ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মোদাচ্ছের হোসেন মণ্ডল, কোলা ইউনিয়নে মনোয়ার হোসেন, নিয়ামতপুর ইউনিয়নে রনি লস্কর, সিমলা-রোকনপুর ইউনিয়নে নাসির উদ্দিন চৌধুরী, ত্রিলোচনপুর ইউনিয়নে নজরুল ইসলাম, মালিয়াট ইউনিয়নে জাহাঙ্গীর হোসেন, কাষ্টভাঙ্গা ইউনিয়নে আয়ুব হোসেন ও রাখালগাছি ইউনিয়নে মহিদুল ইসলাম।
কালীগঞ্জের কোলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আইয়ুব হোসেন নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর বিরুদ্ধে নির্বাচন করছেন। তাঁর বিরুদ্ধে এখনো কোনো ব্যবস্থা না নেওয়া হয়নি। জামাল ইউনিয়নে সলেমান বিশ্বাস ও মোহাম্মদ সেলিম বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন। রাখালগাছি ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি ইজ্জত আলীও বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন। এ ছাড়া কাষ্টভাঙ্গা ইউনিয়নে আরেক যুবলীগের নেতা তরিকুল ইসলাম, সিমলা রোকনপুরে রহমত আলী ও মালিয়াট ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আজিজুর রহমান খান বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে ভোট করছেন। ত্রিলোচনপুর ইউনিয়নে নজরুল ইসলাম ওরফে ঋতু হিজড়া আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চাইলেও, না পেয়ে তিনি শেষ পর্যন্ত বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন।
বিদ্রোহী প্রার্থীরা এখনো দল থেকে বহিষ্কার না হওয়ায়, নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে নৌকা প্রতীকের এক প্রার্থী অভিযোগ করেন, এই উপজেলায় দলের দুটি পক্ষ রয়েছে। উভয় পক্ষ থেকে কেউ দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন, আবার কেউ বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন। এ কারণে কোনো পক্ষই বিদ্রোহী প্রার্থীদের বহিষ্কারের উদ্যোগ নিচ্ছে না।
এ বিষয়ে কালীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মতিয়ার রহমান বলেন, পূর্ণাঙ্গ উপজেলা কমিটি না থাকায়, এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া যাচ্ছে না। ফলে বিষয়টি জেলা কমিটির ওপর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তা ছাড়া যুবলীগের বিষয়টিও জেলা যুবলীগ দেখবে বলে তিনি জানান।
বিএনপি নির্বাচন না করলেও প্রতিদ্বন্দ্বিতায় দুই নেতা
বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটি ইউপি নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের পরও কাষ্টভাঙ্গা ইউনিয়ন থেকে উপজেলা বিএনপির সদস্য আবু জাফর ও নিয়ামতপুর ইউনিয়নে উপজেলা যুবদলের সদস্যসচিব মাহাবুবুর রহমান চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
কালীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ইলিয়াস রহমান বলেন, তিনি দলের সিদ্ধান্তের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে এবারের ইউনিয়ন নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দিলেও, প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নিয়েছেন।