কুমিল্লায় করোনায় চিকিৎসকের মৃত্যু

করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হয়ে মারা গেছেন কুমিল্লা মেডিকেল কলেজের নেফ্রোলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. ওবায়দুর রহমান (৫৬)। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে তিনি মারা যান। করোনায় সংক্রমিত হওয়ার আগে তিনি কুমিল্লা কোভিড হাসপাতালে করোনা রোগীদের সেবায় নিয়োজিত ছিলেন।

ওবায়দুর রহমানের গ্রামের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলায়। তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের মধ্যপাড়া এলাকায় বসবাস করতেন। তিনি স্ত্রী, অস্ট্রেলিয়াপ্রবাসী এক ছেলে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন ইনস্টিটিউটে পড়ুয়া এক মেয়ে, মা, তিন বোন ও এক ভাই রেখে গেছেন। তাঁর স্ত্রী নারায়ণগঞ্জের তোলারাম সরকারি কলেজের বাংলা বিভাগের প্রধান সায়েরা বেগম।

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণের শুরুতে মো. ওবায়দুর রহমান কুমিল্লা মেডিকেল কলেজে যোগ দেন। গত ৩ জুন কুমিল্লা কোভিড হাসপাতাল চালু হয়। এরপর তিনি ওই হাসপাতালে করোনা রোগীদের চিকিত্সা দেন। ২৭ আগস্ট জ্বর, সর্দি, কাশি ও শ্বাসকষ্ট শুরু হলে তিনি নমুনা পরীক্ষা করান। এরপর তাঁর করোনা পজিটিভ হয়। পরে তাঁকে রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে গতকাল বুধবার তাঁকে ভেন্টিলেশন দেওয়া হয়। বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা ৩০ মিনিটে তিনি মারা যান। বাদ মাগরিব তাঁকে রাজধানীর আজিমপুর কবরস্থানে দাফন করা হয়।

বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) কুমিল্লার সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান জসিম বলেন, ‘মো. ওবায়দুর রহমান সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজের ২১তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি কলেজে আমাদের তিন ব্যাচ সিনিয়র (জ্যেষ্ঠ) ছিলেন। অত্যন্ত সদালাপী ও বিনয়ী ছিলেন তিনি। তাঁর মৃত্যুতে আমরা (বিএমএ) গভীর শোক প্রকাশ করছি।’

মো. ওবায়দুর রহমানের স্ত্রীর বড় বোন আয়েশা বেগম বলেন, ‘বাবার মৃত্যুসংবাদ পাওয়ার পর থেকে একমাত্র মেয়ে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়ে। কোনো কথাই বলছে না মেয়েটি। বড় ভালো মানুষ ছিলেন ওবায়দুর রহমান।’
কুমিল্লা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ মোস্তফা কামাল আজাদ ও হাসপাতালের পরিচালক মো. মুজিবুর রহমান বলেন, ‘ওবায়দুর করোনা হাসপাতালে কাজ করেছেন। তিনি করোনা রোগীদের সেবা দিয়েছেন। তাঁর মৃত্যুতে আমরা শোকাহত।’