কুমিল্লা রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা কর্তৃপক্ষের (ইপিজেড) কারখানার বর্জ্যের কারণে আশপাশের এলাকার জমির ধান হচ্ছে না। সবজিখেতেও ফলন কম হচ্ছে। দেশি মাছ বিলুপ্ত হচ্ছে। নলকূপ থেকে বের হচ্ছে ময়লা পানি।
সোমবার ইপিজেডের নির্বাহী পরিচালকের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় কুমিল্লা জেলা কৃষক সমবায়ী ঐক্য পরিষদের নেতারা এ অভিযোগ করেন। এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য দ্রুত পদক্ষেপ নিতে আহ্বান জানিয়েছেন তাঁরা।
বেলা দুইটায় ইপিজেডের সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় উপস্থিত ছিলেন কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. মনিরুল হক, সাবেক সাংসদ মনিরুল হক চৌধুরী, কুমিল্লা ইপিজেডের নির্বাহী পরিচালক মো. জিল্লুর রহমান, পরিবেশ অধিদপ্তর কুমিল্লার উপপরিচালক শওকত আরা, কুমিল্লা জেলা কৃষক সমবায়ী ঐক্য পরিষদের সভাপতি মুহম্মদ আখতার হোসাইন, সাধারণ সম্পাদক শওকত শাহীন, পথিকৃৎ কুমিল্লার সভাপতি শহীদুল হক প্রমুখ। সভা শেষে ইপিজেডের নির্বাহী পরিচালককে দাবির বিষয়ে স্মারকলিপি দেন পরিষদের নেতারা।
সভায় কৃষক সমবায়ী ঐক্য পরিষদের নেতারা জানান, কারখানার তরল বর্জ্য মাটির নিচ দিয়ে চুইয়ে আশপাশের এলাকার মানুষের ফসলি জমি নষ্ট করছে। এতে কৃষক জমি থেকে আগের মতো ফলন পাচ্ছেন না। আশপাশের খাল এবং নালার পানি কালো ও পচা। পুকুরেও কালো পানি ঢুকে যাচ্ছে। এতে নিরাপদ পানি থেকে এলাকাবাসী বঞ্চিত হচ্ছেন। তার ওপর আগের মতো হচ্ছে না সবজি চাষ। গাছ মরে যাচ্ছে। অবিলম্বে বর্জ্য অপসারণের প্রক্রিয়া বের করতে হবে। কৃষকদের বাঁচাতে হবে। অন্যথায় কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের নয়টি ওয়ার্ডের (১৯-২৭) বাসিন্দারা আন্দোলন করবেন। এই অচলাবস্থার একটা সুরাহা চান কৃষকেরা।
সাবেক সাংসদ মনিরুল হক চৌধুরী বলেন, কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের দক্ষিণ এলাকাকে বাঁচাতে হলে ইপিজেডের তরল বর্জ্য শোধনাগারের ত্রুটি সারাতে হবে। এই বর্জ্য শোধনাগার কোনো কাজে আসছে না। কলকারখানার তরল বর্জ্যে মানুষ ভোগান্তিতে আছেন।
পরিবেশ অধিদপ্তরের উপপরিচালক শওকত আরা বলেন, ইপিজেডের বর্জ্য নিজেদের ব্যবস্থাপনায় করতে হবে। এতে মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
মেয়র মো. মনিরুল হক বলেন, ‘এলাকাবাসীর দাবি যৌক্তিক। এই দাবির সঙ্গে আমি একমত। সবাই মিলে এই কাজ করতে হবে। ইপিজেড কর্তৃপক্ষকেই এই দাবি পূরণ করতে হবে।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কুমিল্লা ইপিজেডের নির্বাহী পরিচালক মো. জিল্লুর রহমান বলেন, এলাকাবাসীর দাবি পূরণের চেষ্টা করা হচ্ছে। দাবির বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলা হবে।