কুড়িগ্রামে পঞ্চম দফায় বন্যা, শতাধিক চর প্লাবিত

বন্যা ও ভাঙনে ঘড়বাড়ি সরিয়ে নিচ্ছে একটি পরিবার। সারডোব এলাকা, হোলখানা ইউনিয়ন, কুড়িগ্রাম
সংগৃহীত

কুড়িগ্রামে পঞ্চম দফা বন্যায় ধরলা নদীর পানি শুক্রবার সকালে বিপৎসীমার ৪৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। ভারী বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে ধরলা, তিস্তাসহ বিভিন্ন নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত আছে। তিস্তা ও ব্রহ্মপুত্রের পানিও বিপৎসীমার কাছাকাছি চলে এসেছে।

স্থানীয় বাসিন্দা ও সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, দ্রুত নদ-নদীর পানি বাড়ার ফলে পঞ্চম দফার বন্যায় কুড়িগ্রাম সদর, রাজারহাট, ফুলবাড়ী ও উলিপুর উপজেলার শতাধিক চর নতুন করে প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন প্রায় ৫০ হাজার মানুষ। ডুবে গেছে গ্রামীণ সড়ক। কোথাও কোথাও নৌকা ও কলাগাছের ভেলা ছাড়া যাতায়াতের কোনো মাধ্যম নেই। এসব এলাকায় দেখা দিয়েছে শুকনো খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকট। পানি বাড়ার ফলে বিভিন্ন এলাকায় নদ-নদীর ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। ভাঙনের কবলে পড়েছে বসতভিটা, স্কুল, রাস্তা ও বাঁধ। ঘরবাড়িতে পানি ওঠায় অনেকেই গবাদিপশু নিয়ে বাঁধ ও রাস্তায় আশ্রয় নিয়েছেন।

সদর উপজেলার হোলখানা ইউনিয়নের সারডোব এলাকার বাসিন্দা মোকসেদ আলী বলেন, দফায় দফায় বন্যায় তাঁদের অবস্থা খারাপ হয়ে গেছে। বাঁধের সড়কসহ মাইলখানেক এলাকায় বসতভিটা ভেঙে যাচ্ছে।

হোলখানা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ওমর ফারুক বলেন, তাঁর ইউনিয়নের প্রায় ৩০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। নদীভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে।

জেলার ত্রাণ কার্যালয় সূত্র জানায়, কয়েক দফা বন্যায় কৃষি, সড়ক, মৎস্য, গবাদিপশু, সেতু, কালভার্ট, স্কুলসহ জেলার প্রায় ৪১৭ কোটি ৯১ লাখ ৯৯ হাজার টাকার সম্পদ ও ফসলের ক্ষতি হয়েছে।

কুড়িগ্রামের রাজারহাট আবহাওয়া কার্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বিমল চন্দ্র রায় বলেন, গত ২৫ দিনে কুড়িগ্রামে ৬০০ মিলিমিটারের ওপর বৃষ্টি হয়েছে। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মোস্তাফিজার রহমান বলেন, প্রায় ৫ হাজার হেক্টর আমন ও সবজিখেত পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। প্রচুর বৃষ্টি হচ্ছে ও নদ-নদীর পানি বাড়ছে। এতে ক্ষয়ক্ষতির কারণে বিকল্প ফসলের চিন্তা করা হচ্ছে। বন্যার পর কৃষকদের ভুট্টা, সরিষা, কালাইসহ সবজি চাষে তাগিদ দেওয়া হবে।