কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় আওয়ামী লীগ নেতা সিদ্দিকুর রহমান হত্যা মামলায় উদ্দেশ্যপ্রণোতিভাবে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) দুই নেতাকে আসামি করা হয়েছে বলে দলের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে অভিযোগ করা হয়, জাসদের দুজন নেতার নাম মামলায় যুক্ত করতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির এক নেতা বাধ্য করেছেন।
জাসদের দপ্তর সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন স্বাক্ষরিত বিবৃতিটি মঙ্গলবার সন্ধ্যা সোয়া ছয়টায় ই–মেইলে বিবৃতিটি পাঠান। মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিবৃতি পাঠানোর সত্যতা নিশ্চিত করেন। তবে বিবৃতির কোথাও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় ওই নেতার নাম উল্লেখ করা হয়নি।
গত শুক্রবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে আটটায় চাঁদগ্রাম ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকুর রহমানকে গুলি করে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। এ সময় তাঁর আপন তিন ভাই ও এক ভাতিজা গুলিবিদ্ধ হন।
মামলায় জড়ানোর নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়, জাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও কুষ্টিয়া জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক আবদুল আলীম স্বপন ও তাঁর ছোট ভাই ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল হাফিজ তপনকে একটি মামলায় রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে যুক্ত করা করেছে। দলীয় পদ–পদবির অপব্যবহার করে আওয়ামী লীগের একজন কেন্দ্রীয় নেতা ওই দুজনকে মামলায় যুক্ত করতে বাধ্য করেছেন।
তাঁরা ঘটনার তদন্ত করে প্রকৃত অপরাধীদের বিরুদ্ধে মামলা গ্রহণ এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে যুক্ত জাসদ নেতা আবদুল আলীম ও আবদুল হাফিজের নাম মামলা থেকে বাদ দেওয়ার দাবি জানান। একই সঙ্গে থানা–পুলিশের কাজে ওই আওয়ামী নেতার বারবার হস্তক্ষেপ করার তীব্র নিন্দা জানান।
বিবৃতির কোথাও ওই আওয়ামী লীগ নেতার নাম না থাকার বিষয়ে জানতে চাইলে জাসদের দপ্তর সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘নাম দিলে তো লিখেই দেওয়া হতো। তবে কুষ্টিয়ার বাসিন্দা দুই থেকে তিনজন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে আছে।’
এদিকে হত্যাকাণ্ডের পাঁচ দিন পেরিয়ে গেলেও পুলিশ কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। তাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছেন ভেড়ামারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মজিবর রহমান। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বাদীর লেখা এজাহার মামলা হিসেবে রুজু করা হয়েছে। এখানে আর কিছু নেই।’
কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠানিক সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, জাসদের অভিযোগ ভিত্তিহীন। আওয়ামী লীগ প্রশাসনকে সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে কাজ করতে দেয়। বরং আওয়ামী লীগের কেউ কোনো অপরাধ করলে তাঁকেও আইনের আওতায় নিতে প্রশাসনকে সহযোগিতা করে থাকে।