‘এ দেশের জমিটা হলো আমাদের ক্যানভাস, আর তুলি হলো নদী, নৌকা, লাঙল, গরু, প্রকৃতি। ক্যানভাসে এসব ফুটিয়ে তুলে দেশপ্রেমের বহিঃপ্রকাশ ঘটান শিল্পীরা। বিদেশে যখন কোনো চিত্রকর্মের প্রদর্শনী হয়, তখন এসব দেখেই মুগ্ধ হন বিদেশিরা।’
শিল্পীদের দেশপ্রেম নিয়ে বলতে গিয়ে এসব কথা বলছেন প্রখ্যাত চিত্রশিল্পী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অঙ্কন ও চিত্রায়ণ বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক রফিকুন নবী (রনবী)। আজ শুক্রবার খুলনা নগরের উমেশচন্দ্র পাবলিক লাইব্রেরি মিলনায়তনে আয়োজিত ‘ড. মো. মোজাহারুল ইসলাম স্মরণে স্মারক বক্তৃতা ও শিক্ষাবৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠান’–এ তিনি প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মো. মোজাহারুল ইসলামের ১৩তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে রফিকুন নবী আরও বলেন, জন্মগতভাবেই শিল্পীদের মধ্যে দেশপ্রেমের ছাপ রয়ে যায়। ৫০ ও ৬০–এর দশকের ভাষা আন্দোলন, স্বাধীনতা আন্দোলনেও শিল্পীরা তাঁদের ক্যানভাসে ছবি এঁকে দেশের প্রতি ভালোবাসার কথা জানান দিয়েছিলেন। প্রতিবাদী বিভিন্ন শিল্পকর্ম দিয়ে মানুষকে আন্দোলনে উৎসাহিত করেছিলেন।
খুলনা শিল্পকলা নিয়ে তিনি বলেন, খুলনা ও এর আশপাশের বিভিন্ন জেলায় অনেক গুণী শিল্পীর জন্ম হয়েছে। আশির দশকে খুলনায় প্রথম চিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়। এ থেকে বোঝা যায় খুলনার মানুষ শিল্পকর্মে কতটুকু গুরুত্ব দিতেন।
অনুষ্ঠানে ‘আমাদের চারুকলায় দেশপ্রেম’ শীর্ষক স্মারক বক্তৃতা করেন বিশিষ্ট সমাজবিজ্ঞানী, লেখক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিল্পকলার ইতিহাস বিভাগের অনারারি অধ্যাপক বুলবন ওসমান। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ‘ড. মো. মোজাহারুল ইসলাম ও শার্লী ইসলাম ফাউন্ডেশন’–এর সভাপতি মোহাম্মদ মাজহারুল হান্নান। ওই অনুষ্ঠানে সাতজন এসএসসি পরীক্ষার্থীকে বৃত্তি প্রদান করা হয়।
মো. মোজাহারুল ইসলাম ছিলেন খুলনার কৃতী সন্তান। তিনি কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ছিলেন। ২০০৯ সালে কেমব্রিজে তিনি মারা যান। ড. মো. মোজাহারুল ইসলাম ও শার্লী ইসলাম ফাউন্ডেশন প্রতিবছর তাঁর মৃত্যুবার্ষিকীতে খুলনায় স্মারক বক্তৃতা ও বৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।