কয়রায় মা, বাবা ও মেয়েকে হত্যার ঘটনায় থানায় মামলা, গ্রেপ্তার নেই
খুলনার কয়রা উপজেলার একটি পুকুর থেকে একই পরিবারের তিন সদস্যের লাশ উদ্ধারের ঘটনার ২৪ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। তবে গতকাল মঙ্গলবার রাতে ওই ঘটনায় কয়রা থানায় মামলা করেছেন নিহত হাবিবুল্লাহ গাজীর মা কোহিনুর খানম। মামলার আসামি অজ্ঞাত।
এদিকে যে চার প্রতিবেশীকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় ডেকে নেওয়া হয়েছিল, আজ বুধবার সকাল পর্যন্ত তাঁরা থানাতেই ছিলেন। তাঁদের ব্যাপারে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি বলে জানিয়েছেন কয়রা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রবিউল ইসলাম।
গতকাল সকালে খুলনার পাইকগাছা-কয়রা প্রধান সড়কের পাশে বাগালী ইউনিয়ন পরিষদ এলাকায় একটি পুকুরে মা, বাবা ও মেয়ের লাশ ভাসতে দেখেন স্থানীয় লোকজন। পরে পুলিশকে খবর দিলে তারা লাশ তিনটি উদ্ধার করে।
এই তিনজন হলেন ওই এলাকার হাবিবুল্লাহ গাজী, তাঁর স্ত্রী বিউটি খাতুন ও মেয়ে হাবিবা খাতুন। আশপাশে বসতিহীন ওই বাড়িতে তাঁরা তিনজনই থাকতেন। পুকুরটি ওই পরিবারের। হাবিবুল্লাহ ছিলেন দিনমজুর। মেয়ে হাবিবা খাতুন সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল।
এর মধ্যে বিউটি খাতুনের গলায় দড়ি দিয়ে শ্বাস রোধ করার চিহ্ন রয়েছে। মেয়ে হাবিবা খাতুনের কপালে ও মুখে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। আর বাবা হাবিবুল্লাহ গাজীর হাত-পা বাঁধা এবং মুখে ও মাথায় ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। পুকুরের মধ্যে রক্তমাখা কাঁথা-বালিশ পাওয়া গেছে। আর বাড়ির পাশের এক নালায় পাওয়া গেছে রক্তমাখা কাপড়চোপড়।
পুলিশ ও এলাকাবাসী মনে করছেন, পরিকল্পিতভাবে হত্যার পর লাশ ওই পুকুরে ফেলে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। কেন ও কী কারণে এ হত্যাকাণ্ড, তা কেউ বুঝে উঠতে পারছেন না। তবে প্রাথমিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য চারজনকে থানায় ডেকে নেওয়া হয়েছে। লাশ উদ্ধার করে সুরতহাল প্রতিবেদনের পর গতকাল দুপুরের দিকে ময়নাতদন্তের জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজে পাঠানো হয়।
মামলার এজাহারে হাবিবুল্লাহর মা উল্লেখ করেছেন, তিনি অন্য ছেলের বাড়িতে থাকতেন। ঘটনার আগের দিন সোমবার সন্ধ্যায় তিনি হাবিবুল্লাহর বাড়িতে গিয়েছিলেন। পরে চলে আসেন। তখন পর্যন্ত অস্বাভাবিক কোনো কিছু দেখেননি। সকালে পুকুরে লাশ ভাসতে দেখার কথা শুনে আবার ওই বাড়িতে যান।
কয়রা থানার ওসি রবিউল ইসলাম বলেন, এটি একটি ‘ক্লুলেস’ মামলা। দুর্বৃত্তরা সুকৌশলে ওই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। তবে প্রাথমিকভাবে কয়েকটি ধারণা মাথায় নিয়ে মামলার তদন্ত করা হচ্ছে। আসামিদের গ্রেপ্তারে বিভিন্ন জায়গায় অভিযান অব্যাহত রয়েছে।