খালে প্লাস্টিক বর্জ্য ফেলার সময় সীতাকুণ্ডে ট্রাক জব্দ, মালিককে তলব
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের সোনাইছড়ি ইউনিয়নের মদনাহাট সেতু এলাকায় ট্রাকে করে প্লাস্টিক বর্জ্য খালে ফেলার সময় একটি ট্রাক জব্দ করেছে হাইওয়ে পুলিশ। গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাত সাড়ে ১০টার দিকে ট্রাকটি জব্দ করে বারআউলিয়া হাইওয়ে থানায় নিয়ে আসা হয়। এ ঘটনায় ট্রাকের মালিককে থানায় ডাকা হয়েছে। হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী নাজমুল হক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
নাজমুল হক প্রথম আলোকে বলেন, অবৈধভাবে বর্জ্য ফেলে খালের পানি ও পরিবেশদূষণের অভিযোগে ট্রাকটি জব্দ করা হয়েছে। ট্রাকের মালিককে ডাকা হয়েছে। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, প্রতি রাতে ট্রাকে করে প্লাস্টিক বর্জ্য এনে মদনাহাট খালে ফেলা হয়। এরপর ভাটার সময় বর্জ্যগুলো সাগরে নেমে যায়। গতকাল রাতে ট্রাক থেকে খালে প্লাস্টিক বর্জ্য ফেলতে দেখে স্থানীয় বাসিন্দারা হাইওয়ে পুলিশকে খবর দেন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মদনাহাট সেতুর ওপর থেকে ট্রাকটি জব্দ করে।
ট্রাক থেকে বর্জ্য ফেলা সংশ্লিষ্ট এক ব্যক্তি জানান, তাঁরা বারআউলিয়া হাইওয়ে পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) সুমন রহমানের সঙ্গে কথা বলে বর্জ্যগুলো ফেলেছেন। এ বিষয়ে সুমন রহমান প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল বিকেলে প্লাস্টিকের বর্জ্য নিয়ে একটি ট্রাক মদনাহাট সেতু এলাকায় অবস্থান করছিল। কিন্তু সেখানে গিয়ে তিনি চালক কিংবা তাঁর সহকারীকে খুঁজে পাননি। কিছুক্ষণ পর জরুরি ফোন পেয়ে তিনি দ্রুত ভাটিয়ারী বাজার এলাকায় চলে যান। এর বেশি কিছু তিনি জানেন না বলে জানান।
সোনাইছড়ি ইউনিয়নের বক্তারপাড়া থেকে ভাটিয়ারী পর্যন্ত মহাসড়কের উভয় পাশে বেশ কয়েকটি জায়গায় স্ক্র্যাপ জাহাজের পুরোনো বৈদ্যুতিক তার থেকে কাভারের প্লাস্টিক ছাড়িয়ে তামা আলাদা করা হয়। এরপর প্লাস্টিকের বর্জ্যগুলো কেটে ছোট ছোট টুকরা করে রাতের অন্ধকারে ট্রাকে করে খালে ফেলে দেওয়া হয়।
স্থানীয় বাসিন্দা মামুনুর রশিদ প্রথম আলোকে বলেন, সোনাইছড়ি ইউনিয়নের বক্তারপাড়া থেকে ভাটিয়ারী পর্যন্ত মহাসড়কের উভয় পাশে বেশ কয়েকটি জায়গায় স্ক্র্যাপ জাহাজের পুরোনো বৈদ্যুতিক তার থেকে কাভারের প্লাস্টিক ছাড়িয়ে তামা আলাদা করা হয়। এরপর প্লাস্টিকের বর্জ্যগুলো কেটে ছোট ছোট টুকরা করে রাতের অন্ধকারে ট্রাকে করে খালে ফেলে দেওয়া হয়। গতকাল বর্জ্য ফেলার সময় ট্রাকটি জব্দ করে হাইওয়ে পুলিশ।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. শাহাদাত হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, তিনি বিষয়টি নিয়ে রাতেই সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলেছেন। খালে প্লাস্টিকের বর্জ্য ফেলা মারাত্মক অপরাধ। এ বিষয়ে তিনি দ্রুত একটি ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করবেন বলেও জানান।
চট্টগ্রাম পরিবেশ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. ফেরদৌস আনোয়ার প্রথম আলোকে বলেন, বৈদ্যুতিক তারের কাভারের প্লাস্টিকগুলো রিসাইক্লিং করা হয় বলে তাঁরা জানেন। এগুলো দিয়ে ফার্নেস অয়েল ও একধরনের কালি তৈরি করা হয়। তবে কিছু ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান হয়তো রাতের অন্ধকারে প্লাস্টিকগুলো অবৈধভাবে খালে ফেলে দিতে পারেন। এ ধরনের অপরাধের জন্য কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে তাঁরা তাঁদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেবেন। এ ছাড়া সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যানকেও জবাবদিহির আওতায় আনা হবে বলে জানান তিনি।