খুঁড়ে রাখা সড়কে ধানের চারা লাগিয়ে প্রতিবাদ
সাতক্ষীরা সদর উপজেলার কুশখালী ইউনিয়নের এক কিলোমিটার সড়ক খুঁড়ে ছয় মাস ধরে ফেলে রাখা হয়েছে। বৃষ্টি-কাদায় মানুষ চলাচল করতে পারছে না। ক্ষুব্ধ গ্রামবাসী ওই সড়কে ধানের চারা রোপণ করে প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
সাতক্ষীরা সদর উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, সাতানি হাইস্কুল মোড়-কানারডেঙ্গি সড়কের হাইস্কুল মোড় থেকে এক কিলোমিটার সড়ক নতুন করে নির্মাণের জন্য গত বছরের এপ্রিল মাসে দরপত্র আহ্বান করা হয়। ৭৬ লাখ টাকা ব্যয়ে কাজটি পায় খুলনার মজমল বারহাইন নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ওই বছরের মে মাসে কার্যাদেশ দেওয়া হয়। একই বছরের গত ২৮ জুন শুরু করে ২০ জুলাইয়ের মধ্যে কাজ শেষ করার কথা।
গতকাল শনিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সাতানি হাইস্কুল মোড়ে গিয়ে দেখা যায়, এক কিলোমিটারজুড়ে সড়কটির চারদিক থেকে দেড় থেকে দুই ফুট মাটি খুঁড়ে গর্ত করে রাখা হয়েছে। গর্তে পানি থইথই করছে। এর মধ্যে লাগানো হয়েছে ধানের চারা। তার মাঝখানে প্রদর্শনী (কৃষি প্রণোদনা) নামের একটি প্ল্যাকার্ড লাগানো রয়েছে।
স্থানীয় ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ফেব্রুয়ারি মাস থেকে সড়কের এই অংশ খোঁড়ার পর ঠিকাদার আর এলাকায় আসেননি। সদর উপজেলা প্রকৌশলীকে বারবার বললেও তিনি কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেননি। বাধ্য হয়ে প্রতিবাদস্বরূপ সড়কের ওপর ধানগাছ রোপণ করে দিয়েছেন গ্রামবাসী।
সাতানি-ভাদড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক সিরাজুল ইসলাম বলেন, এই সড়ক দিয়ে সাতানি, ভাদড়া, পায়রাডাঙ্গা, শিবপুর, আড়ুয়াখালীসহ ৭-৮টি গ্রামের মানুষের প্রতিদিন চলাচল করতে হয়। কিন্তু সড়কটি নির্মাণের কথা বলে এভাবে খুঁড়ে দিনের পর দিন ফেলে রাখায় মানুষের ভোগান্তির সীমা নেই। কুশখালী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৮ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য আজিজার রহমান বলেন, ‘ওই কাজের ঠিকাদার আবদুস সালাম মানুষকে বিভ্রান্ত করতে বলছেন, আমার নাকি বালি দেওয়ার কথা ছিল। আমি বালি দিচ্ছি না, তাই কাজ করতে পারছেন না।’
ঠিকাদার আবদুস সালাম বলেন, একজনের বালু দেওয়ার কথা ছিল। তিনি তা সরবরাহ না করায় সমস্যায় পড়েছেন। ছোট এক কাজের জন্য মেশিন নিয়ে যাওয়া যায় না। কীভাবে কাজ করবেন, চিন্তা করে পারছেন না উল্লেখ করে তিনি বলেন, সবাই সহযোগিতা না করলে তাঁর কাজ করা সম্ভব হবে না।
সাতক্ষীরা সদর উপজেলা প্রকৌশলী সফিউল আযম জানান, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাজ না করায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে বারবার চিঠি দিচ্ছেন। তারপরও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজটি করছে না। শুক্রবার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের আবদুস সালামের সঙ্গে কথা হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, ২-৪ দিনের মধ্যে কাজ শুরু করবেন।