খুলনায় করোনা রোগীর মৃত্যুর সংখ্যা আবারও কিছুটা বেড়েছে। মহানগরে অবস্থিত দুটি বেসরকারিসহ চারটি করোনা হাসপাতালের মধ্যে দুটিতে চারজন করোনা রোগী মারা গেছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁরা মারা যান। এর আগের দিন খুলনার একটি হাসপাতালে মাত্র দুজন মারা গিয়েছিলেন। তার আগের দিনও দুজন মারা গেলেও বুধবার মারা গিয়েছিলেন মাত্র একজন।
স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্র জানায়, খুলনায় করোনা রোগীর চাপ বেড়ে যাওয়ায় আগে মহানগরের পাঁচটি হাসপাতালে করোনা চিকিৎসা দেওয়া হতো। রোগীর চাপ কমে যাওয়ায় পাঁচ দিন ধরে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট খুলনা সদর (জেনারেল) হাসপাতাল রোগীশূন্য রয়েছে। এ পরিস্থিতিতে গতকাল বৃহস্পতিবার জেলা করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধ কমিটির এক সভায় ওই হাসপাতালকে আবার সাধারণ হাসপাতাল হিসেবে ফিরিয়ে নেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। কাল শনিবার থেকে সেখানে বহির্বিভাগে সাধারণ রোগী দেখা শুরু হবে। আর সোমবার শুরু হবে সাধারণ রোগী ভর্তি কাযক্রম।
হাসপাতালগুলোর দৈনিকভিত্তিক প্রতিবেদন থেকে দেখা গেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিচতলায় অবস্থিত ২০০ শয্যার করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালে তিন করোনা রোগীর মৃত্যু হয়েছে। আর শহীদ শেখ আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতালে মারা গেছেন একজন। ওই সময়ের মধ্যে বেসরকারি গাজী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও বেসরকারি সিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কোনো রোগীর মৃত্যু হয়নি। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতেও কেউ মারা যাননি।
খুলনা সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্র জানায়, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় যে চারজনের মৃত্যু হয়েছে, তাঁদের মধ্যে দুজন খুলনা জেলার। বাকি দুজন অন্য জেলা থেকে খুলনায় চিকিৎসা নিতে এসেছিলেন।
হাসপাতালগুলোতে রোগী ভর্তির তথ্য থেকে দেখা গেছে, আজ শুক্রবার সকাল পর্যন্ত ২০০ শয্যার ডেডিকেটেড করোনা হাসপাতালে রোগী ভর্তি আছেন ৬৩ জন। এর মধ্যে করোনা রোগী আছেন ২০ জন ও এর উপসর্গ নিয়ে চিকিৎসাধীন রোগী ২৮ জন। এ ছাড়া ওই হাসপাতালে থাকা ২০টি এইচডিইউর সব কটিই খালি পড়ে আছে। আর ২০টি আইসিইউ শয্যার বিপরীতে রোগী আছেন ১৫ জন।
খুলনার শহীদ শেখ আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতালে ১০টি আইসিইউসহ ৪৫টি শয্যা নিয়ে করা হয়েছে করোনা ইউনিট। ওই করোনা ইউনিটে বর্তমানে রোগী ভর্তি রয়েছেন ২০ জন। ১০টি আইসিইউ শয্যার বিপরীতে রোগী ভর্তি রয়েছেন ৮ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় সেখানে দুজন করোনা রোগী ভর্তি হলেও কেউ ছাড়পত্র নেননি।
বেসরকারি গাজী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে করোনা রোগীদের চিকিৎসায় প্রস্তুত করা হয়েছিল ১৫০টি শয্যা। বর্তমানে সেখানে রোগী ভর্তি আছেন আটজন। গত ২৪ ঘণ্টায় সেখানে কেউ ভর্তি না হলেও ছাড়পত্র নিয়েছেন চারজন।
খুলনা সিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রয়েছে ৯০টি শয্যা। বর্তমানে সেখানে রোগী ভর্তি রয়েছেন ২৮ জন। ২৪ ঘণ্টায় সেখানে ৩ জন ভর্তি হয়েছেন ও ৪ জন ছাড়পত্র নিয়েছেন।