দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে খুলনা মহানগর বিএনপির সাবেক সভাপতি নজরুল ইসলামকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। ১২ ডিসেম্বর খুলনা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে নতুন গঠিত কমিটির পুনর্মূল্যায়ন দাবি করার পরদিন তাঁকে ওই নোটিশ দেওয়া হয়।
সোমবার রাতে চিঠিটি হাতে পেয়েছেন নজরুল ইসলাম। তিন দিনের মধ্যে তাঁকে নোটিশের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
ওই নোটিশে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর স্বাক্ষর রয়েছে। নোটিশে বলা হয়েছে, ‘৯ ডিসেম্বর খুলনা মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি গঠিত হয়েছে। ১২ ডিসেম্বর প্রকাশ্যে সংবাদ সম্মেলন করে আপনি (নজরুল ইসলাম) উক্ত আহ্বায়ক কমিটি সম্পর্কে অযৌক্তিক অভিযোগ করেছেন, যা কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে অবজ্ঞা করার শামিল। দলের জাতীয় নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদকের (খুলনা বিভাগ) মতো গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকার পরও সংবাদ সম্মেলন করে ঘোষিত আহ্বায়ক কমিটির বিরুদ্ধে আপনার আক্রমণাত্মক বক্তব্য প্রদান গুরুতর অসদাচরণ এবং দলীয় শৃঙ্খলাবিরোধী কর্মকাণ্ড।’
৯ ডিসেম্বর কেন্দ্র থেকে খুলনা মহানগর ও জেলা বিএনপির আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়। ওই কমিটিতে খুলনা মহানগর বিএনপির সাবেক সভাপতি নজরুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মনিরুজ্জামানকে বাদ দেওয়া হয়। মহানগর বিএনপির নতুন আহ্বায়ক করা হয়েছে আগের জেলা কমিটির সভাপতি শফিকুল আলমকে। আর জেলার আহ্বায়ক করা হয়েছে আগের কমিটির সাধারণ সম্পাদক আমির এজাজ খানকে।
দীর্ঘ ২৮ বছর খুলনা মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন নজরুল ইসলাম। এর মধ্যে ১৬ বছর সাধারণ সম্পাদক ও ১২ বছর ছিলেন সভাপতি। নতুন ঘোষিত কমিটিতে তাঁকে বাদ দেওয়ার প্রতিক্রিয়া হিসেবে ১২ ডিসেম্বর খুলনা প্রেসক্লাবে বিপুলসংখ্যক নেতা-কর্মীকে নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন তিনি। ওই সংবাদ সম্মেলনে খুলনা মহানগরের ৩১টি ওয়ার্ড কমিটির অধিকাংশেরই সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক উপস্থিত ছিলেন। সংবাদ সম্মেলন থেকে তিনি নতুন কমিটির পুনর্মূল্যায়নের দাবি জানান।
কারণ দর্শানোর নোটিশ সম্পর্কে জানতে চাইলে নজরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘দীর্ঘ ৪৪ বছর ধরে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত আছি। কখনো দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ করিনি, দলের স্বার্থবিরোধী কাজে জড়িত হইনি। এবারই প্রথম আমাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। নোটিশের জবাব দেওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি। আশা করি, ন্যায়বিচার পাব।’
নজরুল ইসলাম দাবি করেন, ওই দিন সংবাদ সম্মেলনে তিনি নতুন কমিটি গঠনের প্রতিবাদ করেননি। তিনি শুধু পুনর্মূল্যায়নের দাবি জানিয়েছিলেন। খুলনার বিএনপি বলতে যে নেতা-কর্মীদের বোঝায়, তাঁরা সবাই ওই দাবি করছেন। সত্য গোপন করে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের কাছে মিথ্যা তথ্য উপস্থাপন করে নতুন কমিটি গঠন করা হয়েছে। এতে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানেরই ভাবমূর্তি বিনষ্ট হয়েছে বলে মনে করেন তিনি।