খুলনা মহানগরে অবস্থিত দুটি বেসরকারিসহ পাঁচটি করোনা হাসপাতালের মধ্যে একটিতে চারজন করোনা রোগী মারা গেছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় (গতকাল শনিবার সকাল ৮টা থেকে আজ রোববার সকাল ৮টা পর্যন্ত) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁরা মারা যান। এর আগের দিন তিনটি হাসপাতালে চারজন মারা গিয়েছিলেন। তার আগের দিন মারা গিয়েছিলেন মাত্র দুজন।
আজ মহানগরে অবস্থিত বাকি চারটি হাসপাতালে ওই সময়ের মধ্যে কোনো করোনা রোগীর মৃত্যু হয়নি। এটা নিয়ে টানা ২৪ দিন খুলনায় করোনা রোগীর মৃত্যুর সংখ্যা দুই অঙ্কের নিচে থাকল।
হাসপাতালগুলোর দৈনিক প্রতিবেদন থেকে দেখা গেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিচতলায় অবস্থিত ২০০ শয্যার করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালে মারা গেছেন চারজন। আর ওই সময়ের মধ্যে শহীদ শেখ আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতাল, ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট খুলনা সদর (জেনারেল) হাসপাতাল, বেসরকারি গাজী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও বেসরকারি সিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কোনো রোগীর মৃত্যু হয়নি। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতেও কেউ মারা যাননি।
খুলনা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্যানুযায়ী, খুলনায় যে চারজন করোনা রোগী মারা গেছেন, তাঁদের মধ্যে দুজন খুলনা জেলার। বাকিরা অন্য জেলা থেকে খুলনায় চিকিৎসা নিতে এসেছিলেন। এ ছাড়া রোগী শনাক্তের হারও অনেক কমেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ৪৮৯টি নমুনা পরীক্ষা করে ৮৭ জনের শরীরে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। শনাক্তের ওই হার ১৭। এর আগের দিন শনাক্তের হার ছিল ২২।
গত জুলাই মাসের এমন সময়ও প্রতিদিন খুলনার হাসপাতালগুলোয় ১০ থেকে ১৫ জনের মৃত্যু হচ্ছিল। সেখানে আগস্ট মাস থেকে মৃত্যুর সংখ্যা অনেকটা কমে এসেছে। এখন হাসপাতালগুলোতেও কমেছে রোগী ভর্তির চাপ। প্রতিটি হাসপাতালেই অর্ধেকেরও বেশি শয্যা খালি পড়ে আছে। তবে দুটি সরকারি হাসপাতালে থাকা ৩০টি আইসিইউ শয্যা খালি পড়ে থাকছে না।
রোগী ভর্তির তথ্য থেকে দেখা গেছে, আজ সকাল পর্যন্ত ২০০ শয্যার ডেডিকেটেড করোনা হাসপাতালে রোগী ভর্তি আছেন ৭৪ জন। এর মধ্যে করোনায় আক্রান্ত রোগী আছেন ৩০ জন ও করোনার উপসর্গ নিয়ে চিকিৎসাধীন রোগী আছেন ১৯ জন। এ ছাড়া ওই হাসপাতালে থাকা ২০টি এইচডিইউতে রোগী ভর্তি আছেন মাত্র পাঁচজন। আর ২০টি আইসিইউ শয্যার সব কটিই পরিপূর্ণ।
এদিকে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট খুলনা সদর (জেনারেল) হাসপাতালে (৮০ শয্যার করোনা ইউনিট) বর্তমানে করোনায় আক্রান্ত রোগী ভর্তি রয়েছেন ৭ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় ওই হাসপাতালে ৭ জন করোনা রোগী ভর্তি হয়েছেন আর ছাড়পত্র নিয়েছেন একজন।
খুলনার শহীদ শেখ আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতালে ১০টি আইসিইউসহ ৪৫টি শয্যার করোনা ইউনিটে বর্তমানে রোগী ভর্তি রয়েছেন ২৩ জন। সব কটি আইসিইউ শয্যা পরিপূর্ণ। গত ২৪ ঘণ্টায় সেখানে দুজন ভর্তি ও দুজন ছাড়পত্র নিয়েছেন।
বেসরকারি গাজী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে করোনা রোগীদের চিকিৎসায় প্রস্তুত করা ১৫০টি শয্যার বিপরীতে সেখানে রোগী ভর্তি আছেন মাত্র ১৬ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় সেখানে দুজন ভর্তি ও একজন ছাড়পত্র নিয়েছেন।
খুলনা সিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রয়েছে ৯০টি শয্যা। বর্তমানে সেখানে রোগী ভর্তি রয়েছেন ৩৩ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় সেখানে পাঁচজন ভর্তি ও পাঁচজন ছাড়পত্র নিয়েছেন।