গরম রসের পাত্রে পড়ে প্রাণ গেল শিশুর

শিশু
প্রতীকী ছবি

ফেনীর সোনাগাজী উপজেলায় কোল থেকে খেজুরের গরম রসের পাত্রে পড়ে গা ঝলসে প্রাণ গেছে এক শিশুর। গতকাল শনিবার রাত ১১টার দিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থার শিশুটি মারা যায়। এর আগে গতকাল বেলা সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার চর দরবেশ ইউনিয়নের দক্ষিণ চর দরবেশ এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে। এতে দগ্ধ হয়েছেন শিশুটির দাদা।

মারা যাওয়া শিশুটির নাম আশরাফুল ইসলাম। তার বয়স হয়েছিল সাত মাস। দগ্ধ হওয়া শিশুটির দাদার নাম আবুল হোসেন (৬৫)।

পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শনিবার সকাল থেকে দক্ষিণ চর দরবেশ এলাকার বিভিন্ন গাছির কাছ থেকে পাটালি গুড় তৈরির জন্য রস সংগ্রহ করেন আবুল হোসেন। রস বাড়িতে আনার পর আগুন জ্বালিয়ে বড় পাত্রে রস ঢেলে গরম করে গুড় তৈরি করছিলেন আবুল হোসেনের স্ত্রী। এ সময় আবুল হোসেন তাঁর ছেলে মো. মাসুদের সাত মাস বয়সী ছেলে আশরাফুলকে কোলে নিয়ে চুলার পাশে দাঁড়িয়ে কথা বলছিলেন। হঠাৎ আবুল হোসেনের কোল থেকে শিশুটি গরম রসের পাত্রে পড়ে যায়। সঙ্গে সঙ্গে আবুল হোসেন নাতিকে বাঁচাতে দুই হাত গরম রসে ঢুকিয়ে তাঁকে দ্রুত তুলে মাটিতে রাখেন। ততক্ষণে আশরাফুলের শরীর ও আবুল হোসেনের দুই হাত ঝলসে গেছে। পরে বাড়ির লোকজন দ্রুত দুজনকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক মো. সাদেকুল করিম প্রথম আলোকে বলেন, গরম রসে শিশু আশরাফুলের মাথা ও শ্বাসনালিসহ শরীরের ৩৫ শতাংশ এবং আবুল হোসেনের দুই হাতসহ শরীরের ১০ শতাংশ ঝলসে গেছে। দুজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে পাঠানো হয়। শিশুটি চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত রাতে মারা গেছে বলে তিনি জেনেছেন।

শিশুটির ফুফা মো. লিটনের বরাত দিয়ে চর দরবেশ ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য জামশেদ আলম প্রথম আলোকে বলেন, গরম রসে পড়ে দগ্ধ শিশু আশরাফুল রাতে হাসপাতালে মারা গেছে। শিশুটির লাশ ময়নাতদন্ত ছাড়াই পরিবারের পক্ষ থেকে চাওয়া হয়েছে। চট্টগ্রাম থেকে লাশ বাড়িতে এনে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে।

গরম রসে পড়ে গা ঝলসে যাওয়া শিশুটির চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয়েছে বলে জানান সোনাগাজী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সাজেদুল ইসলাম।