গাজীপুরে মধ্যরাতে বেতন পেলেন তিন কারখানার শ্রমিক

গাজীপুর সিটি করপোরেশনের লক্ষ্মীপুরা এলাকায় স্টাইল ক্র্যাফট কারখানার শ্রমিকদের বেতন দেওয়া হচ্ছে। সোমবার গভীর রাতে
ছবি: সংগৃহীত

গাজীপুর সিটি করপোরেশনের লক্ষ্মীপুরা এলাকার স্টাইল ক্রাফট লিমিটেড কারখানাসহ তিনটি কারখানার শ্রমিকদের বেতন আংশিক পরিশোধ করা হয়েছে। আন্দোলনের মুখে এবং গাজীপুর জেলা প্রশাসন ও পুলিশের চাপে সোমবার মধ্যরাতে বেতন দিতে বাধ্য হয় কারখানা কর্তৃপক্ষ।

শিল্প পুলিশ জানিয়েছে, গাজীপুর জেলায় পোশাকশিল্পসহ ১ হাজার ৯০৩টি কারখানা রয়েছে। অধিকাংশ কারখানা বেতন পরিশোধ করলেও গাজীপুর শিল্প পুলিশের হিসাবে মঙ্গলবার পর্যন্ত ২১টি কারখানার শ্রমিকেরা বেতন পায়নি। আর ৩৩টি কারখানার শ্রমিকেরা বোনাস পাননি। এর মধ্যে কোনোটিতে বেতন দিলে বোনাস দেয়নি, আবার বোনাস দিলে বেতন দেয়নি।

গাজীপুর জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের লক্ষ্মীপুরা এলাকার স্টাইল ক্রাফট লিমিটেড কারখানায় প্রায় চার হাজার শ্রমিক রয়েছেন। শ্রমিকেরা দীর্ঘদিন ধরে সময়মতো বেতন ও বোনাস পাচ্ছিলেন না।

গত জুন মাসের বেতন ও ঈদ বোনাসের দাবিতে শ্রমিকেরা এক সপ্তাহ ধরে আন্দোলন ও জয়দেবপুর-ঢাকা সড়কে অবস্থান নিয়ে অবরোধ সৃষ্টি করেন। রোববার বিকেলে আন্দোলন উত্তপ্ত হয়ে উঠলে জেলা প্রশাসন, শিল্প পুলিশ ও মেট্রোপলিটন পুলিশ শক্ত অবস্থান নিতে বাধ্য হয়। এ সময় পুলিশ ২০ রাউন্ড টিয়ার গ্যাস ও ১৬ রাউন্ড সাউন্ড গ্রেনেড ব্যবহার করে শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।

শ্রমিকদের অনড় অবস্থান এবং ঈদের কথা বিবেচনা করে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়রের সহযোগিতায় সোমবার রাত দুইটার দিকে কারখানা ৪ হাজার ৩০০ শ্রমিককে ৫ হাজার টাকা করে ২ কোটি ১৫ লাখ টাকা পরিশোধ করা হয়। এ ছাড়া জেলা প্রশাসন ও পুলিশের চাপে পড়ে বড়বাড়ি এলাকার ন্যাশনাল কেমিকেল কারখানার শ্রমিকদেরও সোমবার রাতে গড় হারে বেতন পরিশোধ করা হয়েছে। একই দিন রাতে বেতন দেওয়া হয় গাজীপুর সদর উপজেলার ভবানীপুর এলাকার ফার সিরামিক্স কারখানার শ্রমিকদের।

গাজীপুরে স্টাইল ক্রাফট লিমিটেড কারখানার শ্রমিক নজরুল ইসলাম জানান, সোমবার দিবাগত রাত দুইটার দিকে সিটি করপোরেশনের মেয়র ও জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় জনপ্রতি ৫ হাজার টাকা করে পাওয়া গেছে।

গাজীপুর শিল্প পুলিশের পরিদর্শক মো. ইসমাইল হোসেন বলেন, গাজীপুর গত রাতে তিনটি কারখানা শ্রমিকদের আংশিক বেতন দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ২১টি কারখানার বেতন ও ৩৩টি কারখানার বোনাস বাকি আছে।

গাজীপুর জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ওয়াসিউজ্জামান চৌধুরী জানান, জেলা প্রশাসক এস এম তরিকুল ইসলামের নির্দেশে ঈদ পূর্ববর্তী শ্রমিকদের পেমেন্ট পরিশোধের ক্ষেত্রে ঝুঁকিপূর্ণ ও সন্দেহজনক প্রতিষ্ঠানগুলোর তালিকা সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সহায়তায় প্রস্তুত করা হয়। ওই তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর তাই আগে থেকেই সংশ্লিষ্ট সব দপ্তর মিলে শ্রমিকদের বেতন পরিশোধে চাপ অব্যাহত রাখা হয়।